বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা চট্টগ্রাম ও সিলেট
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে হতাহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ভূমিকম্পের আশঙ্কা থেকে বাদ যাচ্ছে না বাংলাদেশও।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে হতাহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ভূমিকম্পের আশঙ্কা থেকে বাদ যাচ্ছে না বাংলাদেশও। ইন্ডিয়া ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে দীর্ঘসময় ধরে শক্তি সঞ্চয় হচ্ছে। আর এই সংযোগস্থলেই অবস্থান বাংলাদেশের। ফলে ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশও, বিশেষ করে সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চল।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পকে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে একটি বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, ওই এলাকার মাটির নিচে থাকা অ্যারাবিয়ান প্লেটটি উত্তর দিকে সরে গিয়ে আনাতোলিয়ান প্লেটে ধাক্কা দিলে এই ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়।
ঝুঁকিতে চট্টগ্রাম অঞ্চল
- ইন্ডিয়া প্লেট পূর্বদিকে বার্মা প্লেটের নীচে তলিয়ে যাচ্ছে আর বার্মা প্লেট পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে সেখানে যে পরিমাণ চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, তাতে আট মাত্রার অধিক ভূমিকম্প হতে পারে। ফলে সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চল ভূমিকম্পের বড় ঝুঁকিতে রয়েছে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুই যুগ ধরে এ নিয়ে গবেষণা করেছে। সেখানে দেখা গেছে, ইন্ডিয়া প্লেট ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে দীর্ঘসময় ধরে কোনো ভূমিকম্পে চাপমুক্ত হয়নি। ফলে সেখানে ৪০০ থেকে হাজার বছর ধরে প্রবল চাপ জমা হয়ে রয়েছে।
________________________________________________________________________
আরও পড়ুনঃ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা এখনো পর্যন্ত ১৫ হাজার
________________________________________________________________________
ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তুরস্ক-সিরিয়ার মতো বাংলাদেশও ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। উত্তরে তিব্বত সাব-প্লেট, ইন্ডিয়ান প্লেট এবং দক্ষিণে বার্মা সাব-প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। আর বাংলাদেশের সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে কয়েকটি প্লেট থাকার কারণে এসব এলাকা বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে।
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠছে সারা দেশ
- মাঝেমধ্যেই ছোট ও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠছে সারা দেশ। গত ১৫ বছরে ছোট বড় ভূমিকম্পে ১৪১ বার কেঁপে ওঠে দেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট ভূকম্পন বড় ভূমিকম্পের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বড় ভূমিকম্পের শতবছরের মধ্যে আরেকটি বড় ভূমিকম্প হয়। সে হিসাবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা প্রকট। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, বহু পুরোনো ভবন, অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড অনুসরণ না করায় ভূমিকম্প ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের এক যৌথ গবেষণায় দেখা যায়, ভারতের আসামে ১৮৯৭ সালে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প আঘাত হানলে ২৫০ কিলোমিটার দূরে ঢাকার ১০ ভাগ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
What's Your Reaction?