অর্থনীতি এখনও গতিশীল ও নিরাপদ আছে: প্রধানমন্ত্রী

Nov 24, 2022 - 14:04
Nov 24, 2022 - 14:05
 0
অর্থনীতি এখনও গতিশীল ও নিরাপদ আছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ছবি সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অনেক কাজ আমরা করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু করোনা, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বজুড়ে মন্দা নোটিশ দিয়েছে। এ মন্দা হতে আমরা যেন পার হওয়া ঘটাতে পারি, সে ব্যাপারে যথেষ্ঠ নিরলস আছি। আমাদের অর্থনীতি এখনও গতিশীল আছে, নিরাপদ আছে। সেটুকু কমপক্ষে আমি বলতে পারি।’

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সকাল বেলা সাড়ে ১০টার দিকে যশোরে বাংলাদেশ আকাশযান বাহিনী (বিএএফ) একাডেমিতে তিনি এই কথা বলেন। এর প্রথমে সেখানে পাসিং আউট কুচকাওয়াজে আদাব  করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার পর একটা যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশের দায়িত্ব নিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে দেশে কোনও রিজার্ভ মানি ছিল না, মুদ্রা নোট ছিল না। রাস্তাঘাট, ব্রিজ সবই ধ্বংসপ্রাপ্ত ছিল। তাছাড়া একটি প্রদেশ, তাকে রাষ্ট্রে উন্নীত করা এবং তার উপযুক্ত প্রত্যেকটি ইন্সটিটিউট উনি একান্ত দ্রুত করেছিলেন। যুদ্ববিদ্ধস্ত দেশকে পুনর্বাসন করে পুনর্গঠন করে উনি অর্থনৈতিক মুক্তির রাস্তায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সঠিক সেই সময়ে ঘাতকের নিষ্ঠুর বুলেটের আঘাতে বঙ্গবন্ধুকে খুন করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটা যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ, আমাদের কিছুই ছিল না। তারপরও বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্রের সাহায্য নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিমান বাহিনী গড়ে তোলেন। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিমান বাহিনীর বিশেষ অবদান রয়েছে। যারা জীবন দিয়েছেন তাদের আমি শ্রদ্ধা জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে, জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশে বার বার ক্যু হয়, উড়োজাহাজ বাহিনীর প্রায় ৬০০ অফিসার এবং সৈনিকদের হত্যার করা হয়। ১৯৭৫ বর্ষের পর থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত নানা ঘটনা ঘটে। সরকারে প্রবল বৃষ্টিপাত পর বিমান বাহিনীকে আবার নতুনভাবে এ্যাভারেজে তোলার আয়োজন নিই। মিগ-২৯ প্রথম ক্রয় করে দিই। তাছাড়া মেক্সিমাম ক্ষমতাসম্পন্ন এয়ার রাডারসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি দিয়ে উড়োজাহাজ বাহিনীকে নতুভাবে আবার গড়ে তুলি। ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার সরকারে এসে আকাশযান বাহিনীর আধুনিকায়ন, অপরেশনাল সক্ষমতার বৃদ্ধির লক্ষ্যে এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান সংযোজনসহ নানা পদক্ষেপ আমরা নিই। ফলে বিমান বাহিনী অধুনা অতিমাত্রা চৌকস এবং দক্ষ। শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের বিমান বাহিনী অধিক অনেক ভালো অবদান পালন করছে। আমরা সেজন্য গর্বিত।’

তিনি বলেন, ‘জাতির বাবা দেশের স্বাধীনতা ঐকরাজ্য রক্ষার জন্য প্রতিরক্ষা নীতিমালা, যেটা উনি ১৯৭৪ সালে প্রণয়ন করে দিয়েছিলেন, সেই পলিসির ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ  ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন শুরু করেছে। আজকের আকাশযান বাহিনী অবকাঠামো, রণকৌশল এবং টেকনোলজির দিক হতে অতীতের চেয়ে অনেক বহু শক্তিশালী, ডিজিটাল ও চৌকস। তাছাড়া আধুনিক বাংলাদেশ আমরা করেছি। কাজেই আমাদের প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠান এবং বাহিনী টেকনোলজি জ্ঞানসম্পন্ন হবে সেদিকে সেভাবে আমরা অ্যারেঞ্জমেন্ট নিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আমরা দেখি, আমাদের দেশে আদার্স রাষ্ট্র থেকেও ট্রেনিং নিচ্ছে। উদাহরণসরূপ নেপাল, ফিলিস্তিন,  জাম্বিয়ার অফিসারগণ এখানে এসেছেন। নবীন অফিসারদের বলবো, আমাদের সরকার  টাইম বিমান বাহিনীর সক্ষমতা এবং প্রশিক্ষণ সুবিধা দিয়ে উন্নয়নে ও আধুনিকায়নে মর্যাদা দ্বারা থাকি। সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’

ক্যাডেটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যেন আমাদের ক্যাডেটদের নিয়ে অহংকার করতে পারি। তাছাড়া শান্তিরক্ষা মিশনে আমরা কাজ করি জগতের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে চলতে হয়, সেজন্য প্রশিক্ষকদের কথা সকল টাইম মনে রাখতে হবে। প্রশিক্ষকদের কথা সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রশিক্ষণ উৎকর্ষতা বৃদ্ধি করে, এই কথাটা মনে রাখার জন্য হবে। আমাদের স্বাধীন দেশ, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি, আমরা জয়ী জাতি। আমরা জগৎ দরবারেসব টাইম মাথা উন্নত করে চলবো। এটাই আমাদের লক্ষ্য।’ 

এদিকে দুপুর ২টার দিকে যশোর জেলা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় কথন দেবেন প্রধানমন্ত্রী। যশোর জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ জানান, এ জনসভায় ১০ লাখ মানুষের অধিবেশন ঘটানোর টার্গেট রয়েছে। বিগত এক সপ্তাহেরও বহু সময় ধরে এ উপলক্ষে চলেছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। অবিরাম   হয়েছে তোরণে, ব্যানারে ও পোস্টারে। যশোরের নানারকম উপজেলা ও আশপাশের উপজেলাসহ খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা হতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এই জনসভায় যোগ দেবেন। সকাল থেকেই জনসভাস্থল অভিমুখে মানুষের ঢল দেখা গেছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow