স্বামীর মতোই বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেলেন পাইলট অঞ্জু
নেপালের পোখারায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে রোববার (১৫ জানুয়ারি) মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৬৮ জনের। ৬৮ জন যাত্রী ও চার জন কেবিন ক্রুকে নিয়ে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন অঞ্জু খাতিওয়াড়া। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের এটিআর-৭২ বিমানের কো-পাইলট ছিলেন তিনি।
রোববার পুরোনো পোখারা বিমানবন্দর এবং পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাঝামাঝি এলাকায় এক বনভূমির মধ্যে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। পোখারায় বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের পাইলট ছিলেন সিনিয়র ক্যাপ্টেন কামাল কেসি। আর কো-পাইলটের আসনে ছিলেন অঞ্জু। এ পর্যন্ত ৬৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা গিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বিমানে থাকা সবারই মৃত্যু হয়েছে।
অঞ্জু খাতিওয়াড়া ক্যাপ্টেন হতে চেয়েছিলেন। স্বপ্ন পূরণে বাকি ছিল আর মাত্র কয়েক সেকেন্ড, বিমানটি বন্দরে নামলেই হতো। শেষ পর্যন্ত সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। ১৬ বছর আগে এক বিমান দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছিল তার স্বামীকে। তিনিও ছিলেন কো-পাইলট, আর কাজ করতেন এই ইয়েতি এয়ারলাইন্সেই।
ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমানটি সফলভাবে অবতরণ করলেই ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হতে পারতেন অঞ্জু। সেই লক্ষ্যেই তিনি রোববার সকালে সিনিয়র পাইলট তথা তার প্রশিক্ষক কামাল কেসির সঙ্গে ফ্লাইটে চড়েন।
আরও পড়ুনঃ নেপালে প্লেন বিধ্বস্ত: ১৩ মরদেহ উদ্ধার, আরও বাড়ার শঙ্কা
উল্লেখ্য, ক্যাপ্টেন পদে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য কোনো পাইলটের কমপক্ষে ১০০ ঘণ্টা ওড়ার অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। সূত্রের খবর, কো-পাইলট হিসেবে নেপালের প্রায় সব বিমানবন্দরে সফলভাবে অবতরণ করার অভিজ্ঞতা ছিল অঞ্জুর। বাকি ছিল শুধু এই নতুন বিমানবন্দরটি। সেই লক্ষ্য অধরাই থেকে গেল। চিফ পাইলটের লাইসেন্স পাওয়া থেকে মাত্র ১০ সেকেন্ড দূরে, ভেঙে পড়ে তার স্বপ্ন। অথচ, ক্যাপ্টেন কামাল কেসির ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা ছিল। অনেক পাইলটকে তিনি অতীতে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। তারা প্রত্যেকেই আজ সফল পাইলট।
২০০৬ সালের ২১ জুন এক বিমান দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারিয়েছিলেন অঞ্জু। তিনিও ছিলেন এক কো-পাইলট। কাকতালীয়ভাবে তিনিও ছিলেন ইয়েতি এয়ারলাইন্সেই। একটি ৯এল এইকিউ বিমানে নেপালগঞ্জ থেকে সুরখেত হয়ে জুমলা যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত হয়েছিল বিমানটি। প্রাণ গিয়েছিল ছয় যাত্রী এবং চার কেবিন ক্রুর। নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন অঞ্জুর স্বামী। ১৬ বছর পর সেই ইয়েতি এয়ারলাইন্সের প্রাণ গেল তার।
What's Your Reaction?