খলনায়ক থেকে সেনেগালের রূপকথার নায়ক আলিউ সিসে
২০০২ তারপর ২০২২, দীর্ঘ দুই দশক অপেক্ষার পর ফুটবল বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে খেলার যোগ্যতা পেয়েছে সেনেগাল।
২০০২ তারপর ২০২২, দীর্ঘ দুই দশক অপেক্ষার পর ফুটবল বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে খেলার যোগ্যতা পেয়েছে সেনেগাল। প্রথমবার খেলোয়াড় হিসেবে নকআউট পর্বে সেনেগালকে নকআউট পর্বে তুলেছিলেন আলিউ সিসে। দুই দশক পর দ্বিতীয়বার দলকে নকআউট পর্বে তোলার সময় সিসে পালন করছেন কোচের দায়িত্ব। একই ক্লাবে খেলার কারণে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাওয়া মোহাম্মদ সালাহ আরেকবারের মতো হতাশ হয়েছেন। কোচ হিসেবে সিসের অনুতাপ ঘুচেছে এবার।
নেতৃত্ব দিতে এসে পাশার দান এভাবে উল্টে যাবে, সেটি সম্ভবত স্বপ্নেও ভাবেননি সিসে। আফ্রিকান কাপ অব নেশনসের ফাইনাল। ক্যামেরুনের সাথে নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গিয়েছে ০-০ গোলে। টাইব্রেকার, শেষ শট। বল জালে জড়ালেই বেঁচে থাকবে শিরোপা বাড়ি নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন। সিসে শটটা সরাসরি তুলে দিলেন গোলরক্ষকের হাতে। উল্লাসে ফেটে পড়ল ক্যামেরুন। আফ্রিকান কাপ অব নেশনসের এতটা সম্মুখে এসেও শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হলো না সেনেগালের ।সবকিছু পেছনে ফেলে যখন নতুন শুরুর কথা ভাবছিলেন, তখন সেই বছরেরই সেপ্টেম্বরে ফেরি দুর্ঘটনায় হারান নিজের পরিবারের অর্ধেক সদস্য
১০ বছর পর যখন কোচ হিসেবে আবারও ফিরে এলেন জাতীয় দলে, ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যর্থ অবস্থানে তখন সেনেগাল দল। টানা তিন বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নেই, আফ্রিকান কাপ অব নেশনসেও গ্রুপপর্বের বাধা কূল করতে পারেনি। ক্ষণস্থায়ী সেনেগালকে আবারও ঠিক রাস্তায় ফেরানোর দায়িত্ব নিলেন সিসে। অবশিষ্ট গল্পটা উত্থানের। দায়িত্ব নিয়েই খোলনলচে বদলে ফেললেন দলের, ১৬ বছর পর টিকিট কাটলেন বিশ্বকাপের। ‘ফেয়ার প্লে’ বিধানের বেড়াজালে পয়েন্ট-গোল ব্যবধান সমান থাকার পরও বিশ্বকাপ হতে বিদায় নিতে হয়ে যায় সেনেগালকে। তাতে দমলেন না, বরং টার্গেট দাঁড় করালেন আফ্রিকান কাপ অব নেশনস। যে কল্পনা অধিনায়কের আর্মব্যান্ড হাতে পূর্ণ করতে পারেননি, সেটি ডাগআউটে দাঁড়িয়েই করবেন—দৃঢ়সংকল্প তাঁর। এখন আফ্রিকা সেরা দল সেনেগাল। নেপথ্যের নায়ক হিসেবে বারবারই উঠে আসছে আলিউ সিসের নাম। অনেকটা রবার্ট ব্রুস মাকড়সার গল্পের মতো। যে ক্যামেরুনের বিপক্ষেই পেনাল্টি মিস করে নিজের জীবনের দুঃস্বপ্ন শুরু হয়েছিল তাঁর। সেই ক্যামেরুনের মাটিতে দাঁড়িয়েই ঘুরে দাঁড়ানোর অন্য রকম এক গল্প লিখলেন আলিউ সিসে।
What's Your Reaction?