হুমায়ুন ফরিদী, হারিয়ে যাওয়া এক নক্ষত্রের নাম
হুমায়ুন ফরিদী, হারিয়ে যাওয়া এক নক্ষত্রের নাম। ১১ বছর হয়ে গেল তিনি চলে গেছেন। আজ তাঁর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নীরবে নিভৃতে হঠাৎ পাড়ি দেন না ফেরার দেশে
হুমায়ুন ফরিদী, হারিয়ে যাওয়া এক নক্ষত্রের নাম। ১১ বছর হয়ে গেল তিনি চলে গেছেন। আজ তাঁর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নীরবে নিভৃতে হঠাৎ পাড়ি দেন না ফেরার দেশে। শক্তিমান একজন অভিনেতা ছিলেন হুমায়ুন ফরিদী। নিজের চরিত্রকে এতো অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলতেন যে দর্শকরাও হারিয়ে যেতেন সেই অভিনয়ের মায়া জালে। চলচ্চিত্র, মঞ্চ ও টেলিভিশনে তিনি ছিলেন জনপ্রিয়। বাংলাদেশের নাট্য ও সিনেমা জগতে তিনি অসাধারণ ও অবিসংবাদিত চরিত্রে অভিনয়ের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন।
১৯৮০ ও ৯০’র দশকে যে কয়েকজন অভিনয় শিল্পী মঞ্চ ও টিভি নাটককে অসম্ভব জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিলেন, ফরীদি ছিলেন তাদেরই একজন। অভিনয় করতে গিয়ে তিনি নিজস্ব একটি অভিনয়-ধারা তৈরী করেছিলেন, যা তাঁকে সময়ের কোলে অনন্য করে রেখেছে। তাইতো দেশ-বিদেশের অগণিত মানুষ আজও তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
মৃত্যু নিয়ে হুমায়ুন ফরীদির দর্শন ছিল। ‘মৃত্যুর মতো এত স্নিগ্ধ, এত গভীর সুন্দর আর কিছু নেই। কারণ মৃত্যু অনিবার্য। তুমি যখন জন্মেছ, তখন মরতেই হবে। মৃত্যুর বিষয়টি মাথায় থাকলে কেউ পাপ করবে না। যেটা অনিবার্য, তাকে ভালোবাসাটাই শ্রেয়।’
তিনি আরও বলে গেছেন, ‘মৃত্যুকে ভয় পাওয়া মূর্খতা। জ্ঞানীরা মৃত্যুকে ভয় পায় না। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করো, গ্রহণ করো, বরণ করে নাও। তাহলে দেখবে জীবন কত সুন্দর।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত নাট্য উৎসবে তিনি অন্যতম সংগঠক ছিলেন। মূলত এ উৎসবের মাধ্যমে তিনি নাট্যাঙ্গনে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থাতেই তিনি ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ লাভ করেন। নব্বইয়ের দশকে হুমায়ুন ফরীদি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন।
এরপর যুক্ত হন ঢাকা থিয়েটারের নাট্যচর্চার সঙ্গে। ঢাকা থিয়েটারের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করেন কিত্তনখোলা, মুন্তাসির ফ্যান্টাসি, কেরামত মঙ্গল, ধূর্ত উই প্রভৃতি নাটকে।
কেরামত মঙ্গল নাটকে কেরামত চরিত্রে হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় এখনও আলোচিত হয় ঢাকার মঞ্চে।
২০০৪ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন হুমায়ুন ফরীদি। নাট্যাঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাকে সম্মাননা প্রদান করে। তবে ফরিদীর একুশের পদকের জন্য এবার তরুণ সমাজের মধ্য থেকে দাবি তোলা হলেও শেষপর্যন্ত তাকে দেয়া হয়নি এ সম্মানসূচক পদক। যা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
What's Your Reaction?