দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

দুদকের সাবেক কমিশনার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সোমবার নির্বাচন ভবনে তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন নির্বাচন কর্তা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

Feb 13, 2023 - 14:03
 0
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু
ছবি: সংগৃহীত

সোমবার (১৩) নির্বাচন ভবনে এ ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

সাংবাদিকদের নির্বাচন কমিশনার জানান, এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন আজই জারি হতে পারে।

রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য এই পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ২০১৩ সালের ২০ মার্চ থেকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শুরু করেন মো. আবদুল হামিদ। একই বছরের ২২শে এপ্রিল তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় 

পরবর্তীতে দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন মো. আবদুল হামিদ। সেই অনুযায়ী, তার ৫ বছরের মেয়াদ আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে।

সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার। বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থী ছিল না।

মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু রাষ্ট্রপতি পদে একক প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনের জন্য সংসদের সভা বা ভোটের প্রয়োজন হয়নি।

এর আগে, রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। গতকাল রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।

মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৪৯ সালে পাবনা শহরের জুবিলি ট্যাঙ্কপাড়ায় (শিবরামপুর) জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শরফুদ্দিন আনছারী ও মাতা খায়রুন্নেসা। তিনি পাবনা শহরের পূর্বতন গান্ধি বালক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করে রাধানগর মজুমদার একাডেমিতে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৬৬ সালে এসএসসি পাস করার পর পাবনার ঐতিহ্যবাহী সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ১৯৬৮ সালে এইচএসসি ও ১৯৭১ সালে (অনুষ্ঠিত ১৯৭২সালে) বিএসসি পাস করেন। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং পাবনা শহিদ অ্যাডভোকেট আমিনুদ্দিন আইন কলেজ থেকে ১৯৭৫ সালে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও ১৯৭০ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান।

মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হিসেবে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু আইন পেশায় যোগ দেন এবং ১৯৮২ সাল পর্যন্ত এই পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। পরে ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর পরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়। যাতে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে সেসব ঘটনার তদন্তে কমিশন গঠন করে, যার প্রধান ছিলেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের অন্যতম কাণ্ডারি হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু পাবনা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনেরও সভাপতি।

মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে পরপর দুই বার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব নির্বাচিত হন। পেশাগত জীবনে প্রথম দিকে সাংবাদিকতাও করেছেন। তিনি পাবনা প্রেসক্লাব ও অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির আজীবন সদস্য।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow