এমির কাঁধে ভর করে শিরোপা, তার হাতেই গোল্ডেন গ্লাভস

‘লিওনেল মেসিকে বিশ্বকাপ জেতাতে সবকিছু করব’- দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বলেছিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। কথা অক্ষরে অক্ষরে রেখেছেন আর্জেন্টিনার

Dec 19, 2022 - 11:24
 0
এমির কাঁধে  ভর করে শিরোপা, তার হাতেই গোল্ডেন গ্লাভস
দুর্দান্ত সেভ থেকে শুরু করে রোমাঞ্চকর শ্যুট আউটেও রেখেছেন আস্থার দাম। : সংগ্রহীত ছবি

‘লিওনেল মেসিকে বিশ্বকাপ জেতাতে সবকিছু করব’- দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বলেছিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। কথা অক্ষরে অক্ষরে রেখেছেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক। দুর্দান্ত সেভ থেকে শুরু করে রোমাঞ্চকর শ্যুট আউটেও রেখেছেন আস্থার দাম। বনেছেন কাতার বিশ্বকাপের সেরা গোল প্রহরীতে, পুরস্কার হিসেবে হাতে উঠেছে গোল্ডেন গ্লাভস।

কাতার আসরজুড়ে আর্জেন্টিনার হয়ে দুর্দান্ত ছিলেন কোপা আমেরিকা জয়ের নায়কদের অন্যতম মার্টিনেজ। তীক্ষ্ণ চোখ, প্রতিপক্ষের মুভমেন্ট পড়ে ফেলা, আর বাজপাখির মতো ঝাঁপিয়ে প্রতিপক্ষের শট আটকে দেয়া। ম্যাচের সবচেয়ে দৃঢ় কাজটা পর্যায়ক্রমে করেছেন। কোয়ার্টার ফাইনালে দুর্দান্ত ছিলেন এমি। লুইস ফন গালের শিষ্যদের দুটি পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে কাঁদিয়েছেন ডাচদের, স্নায়ুচাপী ম্যাচে টাইব্রেকারে এনেছিলেন রোমাঞ্চকর জয়। একই থাকলেন ফাইনালেও।

আরও পড়ুনঃ ৩৬ বছরের খরা কাটিয়ে বিশ্বকাপ জিতল আর্জেন্টিনা 

অধিনায়ক মেসি একারণে পেনাল্টিতে বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর মাটিতে শুয়ে থাকা মার্টিনেজের কাছেই গিয়েছেন সবার আগে। ধন্যবাদ জানিয়ে ম্যাচের নায়কের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছেন। শুধু কোয়ার্টারে নয় পুরো আসরেই দাপুটে ছিলেন এমি। কোয়ার্টারের ম্যাচ শেষে আক্ষেপ করেছিলেন, ইশ গোল দুটো আটকাতে পারলাম না। তাহলে হয়ত ম্যাচের ফল ভিন্ন হতে পারতো। শঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন, কাজটা ঠিকঠাক করছি তো!

‘বাজপাখি’ মার্টিনেজ ঠিকঠাকই করেছেন কাজটা। বিশ্বকাপে সাত ম্যাচের তিনটিতেই প্রতিপক্ষকে দেননি গোল করতে। ক্লিন শিট না পেলেও দারুণ  সেভে অস্ট্রেলিয়াকে শেষ ষোলোতে বাড়ি পাঠিয়েছেন। কোয়ার্টারে করেছিলেন অনবদ্য পারফর্ম। সেমিতে ক্রোয়েটদের থামিয়ে দিতে যেন সাটার টেনে দিয়ে চীনের প্রাচীর ছিলেন গোলপোস্টে।

সবশেষ ফাইনাল, মেসির হাতে বিশ্বকাপ ওঠার রাতেও কম যাননি মার্টিনেজ। সকল অঙ্ক মিলিয়েই তিনি সেরা, গোল্ডেন গ্লাভসের দৌড়ে পেছনে ফেলেছেন মরক্কোর ইয়াসিন বোনো, ফ্রান্সের হুগো লরিসকে। কাছেও ঘেঁষতে দেননি ক্রোয়েট গোলরক্ষককে।

রোলার কোস্টারে চলা আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপে পুরো সময় গোলবারের নিম্নদেশে ছিলেন এমি। হৃদয়ভাঙা সৌদির অঘটনের দিনেও ছিলেন দুর্দান্ত। তা সত্ত্বেও অফসাইড ভাগ্য আর হতচকিত দুই গোলে সেদিন মাথা নিচু করে মাঠ ছেড়েছিলেন মার্টিনেজ। পরের ম্যাচগুলোতে দাপট দেখিয়েছেন।

প্রতিপক্ষের গোলে শট নেয়ার তালিকাটা দেখা যাক- গ্রুপ ‘সি’ থেকে মেক্সিকোর একটি, পোলিশদের দুইটি, অস্ট্রেলিয়ার একটি, নেদারল্যান্ডসের তিনটি, ক্রোয়েশিয়ার তিনটি শট ঠেকিয়েছেন দৃঢ় প্রত্যয়ে। মার্টিনেজ যেন ছিলেন গোলের অতন্দ্রপ্রহরী, তাকে কাটিয়ে বল জালে জড়ানোও ছিল প্রায় অসম্ভব!

কোপা আমেরিকা জিততে ৬ ম্যাচে ৫৪০ মিনিট খেলা মার্টিনেজ চারবার রেখেছেন নিজের জাল অক্ষত। বিশ্বকাপেও সংখ্যাটি একই। সাত ম্যাচে চারবার ক্লিনশিট করেছেন এমি। প্রতিপক্ষ তাকে ফাঁকি দিতে পেরেছিল আটবার। তবে গোটা বিশ্বকাপে এমন সকল সেভ করে দলকে বিপদমুক্ত করেছেন, ফাইনালে দুর্দান্ত কয়েকটি সেভের পর শুট আউটেও দেয়াল হন ফরাসিদের সামনে। যা আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপটাই জিতিয়ে দিল।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow