রিংটোন হিসেবে আজান ও কোরআন তেলাওয়াত যাবে কি?
মোবাইলে রিংটোনে কোরআন তেলাওয়াত, আজান, দোয়া বাজানোর প্রবণতা লক্ষ্য যায় অনেকের মাঝে। সন্দেহ নেই যারা কাজটি করছেন তারা দরুদ, আজান বা ধর্মীয় বিষয়গুলোর প্রতি মুগ্ধতা ও আলাদা ঝোঁক থেকেই করে যাচ্ছেন
মোবাইলে রিংটোনে কোরআন তেলাওয়াত, আজান, দোয়া বাজানোর প্রবণতা লক্ষ্য যায় অনেকের মাঝে। সন্দেহ নেই যারা কাজটি করছেন তারা দরুদ, আজান বা ধর্মীয় বিষয়গুলোর প্রতি মুগ্ধতা ও আলাদা ঝোঁক থেকেই করে যাচ্ছেন।
তবে আলেমরা বলেন, আজান, তিলাওয়াত, জিকির , দোয়া–এগুলো ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আর প্রার্থনা করতে হয় শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে। ইবাদতের যথেচ্ছা ব্যবহার ও প্রয়োগ অন্যায়। মোবাইলে রিংটোন হিসাবে এগুলোর ব্যবহার যে অপাত্রে ব্যবহার তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুনঃ মুমিনদের জন্য শুক্রবার " আল্লাহর " পক্ষ হতে উপহার
আলেমদের মতে, ক্রেতাকে আকৃষ্ট করার জন্য বিক্রেতার জোরে জোরে সুবহানাল্লাহ বলা, প্রহরী জাগ্রত আছে একথা বুঝানোর জন্য জোরে জোরে জিকির করা ফেকাহবিদদের দৃষ্টিতে অপব্যবহার। এজন্য রিংটোন সংখ্যায় আজান, তিলাওয়াত, জিকির, দোয়ার ব্যবহার বৈধ হবে না তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়াও রিংটোন সংখ্যায় আজান, তিলাওয়াত, জিকির, দোয়া ব্যবহারের আরও বেশ কয়েকটি বিপদের কথা তুলে ধরেছেন আলেমরা। যেমন-
১. মোবাইলের রিংটোনে কোরআনের তিলাওয়াত বেজে উঠলে কিন্তু পর্যাপ্ত ক্ষেত্রে ব্যস্ততার কারণে তিলাওয়াতের প্রতি ভ্রূক্ষেপ করার চান্স হয় না। তাই কে রিং করেছে তা দেখা ও কল রিসিভ করার ব্যস্ততা তো লেগেই থাকে এই কারণেও তিলাওয়াতের আদব রক্ষা করে শ্রবণ করা হয় না।
২. মোবাইলের রিংটোনে কোরআনের তিলাওয়াত বেজে উঠলে রিসিভের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে ও এটিই খাঁটি উদ্দেশ্য থাকে একারণে আয়াতের যেকোনো স্থানেই তিলাওয়াত চলতে থাক সে দিকে ভ্রূক্ষেপ না করে রিসিভ করে ফেলে। এতে প্রচুর ক্ষেত্রে উচ্চারিত অংশের বিবেচনায় আয়াতের অর্থ বিকৃত হয়ে যায়।
৩. মোবাইল নিয়ে টয়লেট অথবা বাথরুমে প্রবেশের পর রিং বেজে উঠলে অপবিত্র স্থানে খোদা তায়ালার পবিত্র কালাম, জিকির এবং আজান বেজে উঠবে। এতে এর সাধুতা ক্ষুণ্ণ হয়।
আরও পড়ুনঃ নবজাতকের জন্য বাবা-মা যে দোয়া করবেন
আলেমরা আরও বলেন, মোবাইল রিংটোন বাজানো হয় সাধারণত কাউকে ডাকা, জাগানো বা সতর্ক করার জন্য। কোরআনের আয়াত, আল্লাহর নাম, দুরুদ এবং জিকির মানুষকে ডাকে পাঠানো বা সর্তক করার জন্য নির্ধারণ করেনি ইসলাম। ইসলামের এরূপ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নিজস্বতা বিনাশ করে ভিন্ন পথে ব্যবহারের সুযোগ নেই।
ফেকহের ১টি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো, আল্লাহ তায়ালার নাম, কুরআনের আয়াত বা দরূদ শরিফ, জিকির প্রভৃতি কাউকে ডাকা, সতর্ক করার জন্য ইউজ ইসলামে বৈধ নয়।
-(আততিবয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন-ইমাম নববী ৪৬, হক্কুততিলাওয়া- হুসাইনী শাইখ উসমান ৪০১, ফাতাওয়া আলমগীরী ৫/৩১৫, আলমুগনী ৪/৪৮২, রদ্দুল মুহতার ১/৫১৮, ১/৫৪৬, আলাতে জাদীদা, মুফতী মুহাম্মাদ শফী রহ., আলকাফী ১/৩৭৬, আলআশবাহ ৩৫)
What's Your Reaction?