রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ইউক্রেনজুড়ে লোডশেডিং
ইউক্রেনজুড়ে নতুন করে শুরু করা রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে। দানিপ্রো শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে ওই হামলায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে
ইউক্রেনজুড়ে নতুন করে শুরু করা রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে। দানিপ্রো শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে ওই হামলায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। কিয়েভ, খারকিভ এবং ওডেসা শহরের ওপরেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ আজ মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
একাধিক শহরের বিদ্যুৎ স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করার পর ইউক্রেনের বেশিরভাগ অঞ্চল এখন জরুরি ব্ল্যাকআউট বা তড়িৎ বিচ্ছিন্ন পরিস্থিতিতে রয়েছে। এর আগে যুক্তরাজ্য জানিয়েছিল যে, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা জোরালো করার জন্য সহায়তার অংশ পরিমাণে তারা দেশটিকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অন্যতম শক্তিশালী যুদ্ধাস্ত্র চ্যালেঞ্জার-২ ট্যাঙ্ক সরবরাহ করবে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী যোগী সুনাক বলেছেন, রাশিয়ান বাহিনীকে হটিয়ে দেওয়ার জন্য সহায়তা করবে এসব ট্যাঙ্ক।তবে এর পাল্টা উত্তরে রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র দেয়া হলে তা রাশিয়ার অভিযানকে আরও ব্যাপক করে তুলবে ও তাতে অনেক বেশি সাধারণ মানুষ হতাহত হবে।
শনিবার রাত্রিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদামির জেলেনস্কি বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো যদি প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র যোগাড় করে, তাহলেই বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রাশিয়ার হামলা ঠেকানো সম্ভব। ‘’এজন্য (রাশিয়ার হামলা ঠেকানো) কী করা দরকার? আমাদের পাশ্চাত্য ফ্রেন্ড দেশগুলোর গুদামে যেসব অস্ত্র রয়েছে আর আমাদের সৈন্যরা যেসব অস্ত্রের জন্য অপেক্ষা করছে, সেগুলো দরকার,’’ ১টি ভিডিও মেসেজে বলেছেন মি. জেলেনস্কি। তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনের বাহিনী ২০ থেকে ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই বিনাশ করে দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ এপ্রিলে জাপান সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সর্বাপেক্ষা বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে দানিপ্রো শহরে। সেখানকার একটি নয় তলা ভবনের প্রবেশমুখে ক্ষেপণাস্ত্র প্রহার করলে বেশ কিছু তলা ধূলিসাৎ হয়ে যায়। ইউক্রেনেরে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই আঘাতে কমপক্ষে ৭৩ জন আহত হয়ে গিয়েছে যাদের মধ্যে ১৪টি শিশুও রয়েছে। গত কয়েক মাসের মধ্যে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
ভিডিও বার্তায় মি. জেলেনস্কি জানিয়েছে, দানিপ্রো শহরের বিধ্বস্ত ভবনে সারারাত ধরে ধ্বংসস্তূপ সরানো আর উদ্ধার অভিযান চলেছে। বিধ্বস্ত ভবন হতে ৩৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ছয়টি শিশু রয়েছে। কিন্তু শহরের তড়িৎ অবকাঠামোর কাছাকাছি না হওয়ার পরেও কি জন্য এ ভবনটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, সে ব্যাপারে কোন ইনফরমেশন পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা করা হলেও হয়তো এটা রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর লক্ষ্য নির্ধারণে ত্রুটিপূর্ণ ছিল। অথবা রাশিয়ার যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেন ভূপাতিত করেছে, এটি তার একটিও থেকে পারে, যদিও সেই সম্ভাবনা কম।
আরও পড়ুনঃ সোমালিয়ায় আত্মঘাতী বোমা হামলা, নিহত ১
দুই সপ্তাহ আগে লেটেস্ট ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোয় হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। ইউক্রেন জানিয়েছে, এসব হামলায় খারকিভ আর কিয়েভ এরিয়ায় বিপর্যয়কর অবস্থা প্রস্তুত হয়েছে।
ইউক্রেন এবং পাশ্চাত্য দেশগুলোর কর্মকর্তারা ভাবতে চালু করেছিলেন যে, রাশিয়ার ‘এনার্জি ওয়ার’ হয়তো-বা শেষ হতে চলেছে কারণ তাই অনেক ক্ষেপণাস্ত্র সংকট রয়েছে রাশিয়ার। তাছাড়া এই কৌশল ইউক্রেনিয়ানদের মনোবল ভাঙ্গতেও সক্ষম হচ্ছে না। কিন্তু শনিবারের হামলা প্রুফ করেছে যে, মস্কো এখনো এই কৌশল অব্যাহত রাখার কথা ভাবছে।
What's Your Reaction?