মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় নিহত ১০০

মিয়ানমার সামরিক বাহিনী সেন্ট্রাল সাগাইং অঞ্চলে একটি কমিউনিটি হলে বিমান হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেছে। এই হামলায় অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন। bনিহতদের মধ্যে নারী ও স্কুলছাত্রী ছিল।

Apr 12, 2023 - 10:56
 0
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় নিহত  ১০০
সংগ্রহীত ছবি

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে বুধবার (১২ এপ্রিল) বার্তাসংস্থা এপি এ তথ্য জানিয়েছে।

বুধবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, মঙ্গলবার সকালে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ সাগাইংয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। এদিন নিহতের সংখ্যা ৫৩ জন ছিল। কিন্তু পরে দেশটির স্বাধীন মিডিয়ার রিপোর্টে নিহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১০০ জনে উন্নীত হয়েছে বলে জানানো হয়। সাগাইং এলাকা ইয়াঙ্গুন থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাজিগি শহরের ব্যারেজে হামলায় নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন, মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের কানবালু শহরের পাজিগি গ্রামের বাইরে দেশটির বিরোধী গোষ্ঠীর একটি স্থানীয় কার্যালয় খোলার জন্য মঙ্গলবার সকাল ৮টায় বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। উপস্থিত সেই মানুষের ভিড়েই সরাসরি বিমান হামলা চালায় সেনাবাহিনী।

হামলার শিকার এই অঞ্চলটি মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের প্রায় ১১০ কিলোমিটার (৭০ মাইল) উত্তরে অবস্থিত।

ওই প্রত্যক্ষদর্শী আরও বলেন, হামলার প্রায় আধা ঘণ্টা পরে একটি হেলিকপ্টার সেখানে উপস্থিত হয় এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতার গুলিবর্ষণ করে।

এপি বলছে, হামলার পর প্রাথমিক রিপোর্টে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৫৩ বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পরে দেশটির স্বাধীন মিডিয়ার রিপোর্টে নিহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১০০ জনে উন্নীত হয়েছে বলে জানানো হয়।
এর আগে মিয়ানমারে গত এক সপ্তাহে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) ও সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠী দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে হামলা করে অন্তত ১১৪ জন সরকারি সেনাকে হত্যা করেছে। পিডিএফ ও সশস্ত্র গোষ্ঠী যৌথভাবে সরকারের বর্ডার গার্ড ফোর্সেসের (বিজিএফ) ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে। কারেন রাজ্যের মিওয়াদি টাউনশিপে এই হামলা চালানো হয়।

জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্যরা এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে এবং সামরিক বাহিনীকে জবাবদিহি করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সন্ত্রাসী সামরিক বাহিনীর এই জঘন্য হামলা নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে তাদের নির্বিচারে চরম শক্তি প্রয়োগের আরেকটি উদাহরণ, এটি একটি যুদ্ধাপরাধ।’

মূলত এনইউজি সেনাবাহিনীর বিরোধিতা করে নিজেকে মিয়ানমারের বৈধ সরকার বলে থাকে। মঙ্গলবার যে অফিসটি উদ্বোধন করা হচ্ছিল তা ছিল এই গোষ্ঠীটির প্রশাসনিক নেটওয়ার্কের অংশ।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে। এ ছাড়া নোবেলজয়ী সু চিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় জান্তা সরকার ক্ষমতা দখল করলেও দেশটির সিংহভাগ জনগণ বিষয়টি মেনে নেয়নি। রাস্তায় বিক্ষোভ, সরকারি কার্যক্রম বয়কটসহ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে দেশটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এতে এখন পর্যন্ত দুই হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।

আহত হয়েছেন আরও অনেকে। অভিযান চালিয়ে অনেককে আটক করারও অভিযোগ ওঠে। বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন দেশটির সেনাদের নির্যাতনে। শুধু তা-ই নয়, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে মিয়ানমারের অর্থনীতি। এখনো প্রায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর সদস্যদের লড়াইয়ের খবর পাওয়া যায়।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow