নতুন বছরে যেসব চ্যালেঞ্জ দেখছেন অর্থনীতিবিদরা

দেশের অর্থনৈতিক সংকট শিগগিরই শেষ হচ্ছে না। চলতি অর্থবছরে তো বটেই; আগামী অর্থবছরগুলোতেও অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে আলো-আঁধারির খেলা থাকবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

Feb 1, 2023 - 12:41
 0
নতুন বছরে যেসব চ্যালেঞ্জ দেখছেন অর্থনীতিবিদরা
কমবে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত। যদিও রেমিট্যান্স ও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ কিছুটা বাড়বে : সংগ্রহীত ছবি

দেশের অর্থনৈতিক সংকট শিগগিরই শেষ হচ্ছে না। চলতি অর্থবছরে তো বটেই; আগামী অর্থবছরগুলোতেও অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে আলো-আঁধারির খেলা থাকবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

সংস্থাটি মনে করছে, চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, সরকারি ও বেসরকারি ব্যয়, আমদানি-রপ্তানি কমবে। মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়বে। কমবে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত। যদিও রেমিট্যান্স ও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ কিছুটা বাড়বে। এ অবস্থায় দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি করোনার আগের অবস্থায় অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ফিরতে কমপক্ষে ৫ বছর লাগবে। ২০২৬-২৭ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৪ শতাংশ ছুঁতে পারে বলে মনে করছে আইএমএফ।

বিদ্যুতের দাম

  • মেয়াদি ঋণ বিতরণ কমায় নতুন শিল্প স্থাপনের গতি হবে বাধাগ্রস্ত। এতে বেকারদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের গতি কমে যাবে। নতুন বছরে বিদ্যুতের দাম বাড়বে। এতে প্রায় সব পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে গিয়ে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। নির্বাচনি বছর হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা থাকারও শঙ্কা আছে।

তবে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, নতুন বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা বাড়তে পারে। রপ্তানিতে বছরজুড়েই চ্যালেঞ্জ থাকবে। কৃষি পণ্যের উৎপাদন বাড়ার আভাস দেওয়া হয়েছে। এতে দেশে খাদ্য সরবরাহে কিছুটা স্বস্তি আসতে পারে।

________________________________________________________________________

আরও পড়ুনঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভোটকেন্দ্রে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল উদ্ধার

_________________________________________________________________________

অর্থনীতিবিদের  মন্তব্য

  • নতুন বছরের অর্থনীতি সম্পর্কে উল্লিখিত আভাস মিলেছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে। এছাড়া দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদরাও এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। সংকট মোকাবিলায় সরকারকে দক্ষতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাজারে তদারকি বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়ার কথা বলেছেন তারা।
    বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৩ সাল বাংলাদেশকে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর বাইরে নতুন করে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ দেখা দিয়েছে, যা অর্থনৈতিক কর্মকা-ে অনিশ্চয়তা ও বাধার সৃষ্টি করবে। আগামী বছর বাংলাদেশকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ আরও বৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়া, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের বড় ধাক্কা সামাল দিতে হবে। এর সঙ্গে বিনিয়োগ কমে কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়া, আমদানি কমায় দেশীয় শিল্পে সংকট আরও বাড়ার নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। 

______________________________________________________________________________________

আরও পড়ুনঃ বিদ্যুৎ সেক্টরে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাশুল বারবার জনগণকে দিতে হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

______________________________________________________________________________________

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও এ ঋণ অনুমোদনের পর উচ্ছ্বসিত। তারা বলছেন, আইএমএফ থেকে ৪২ মাসে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার যে ঋণ পাওয়া যাচ্ছে, তা বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করতে তেমন কোনো ভূমিকা রাখবে না। কারণ, এটি বাংলাদেশের মাত্র ১৫ দিনের আমদানি ব্যয়ের সমান। তবে এ ঋণের কারণে বিদেশি ব্যাংক ও ঋণদাতাদের বাংলাদেশের প্রতি নতুন করে আস্থা সৃষ্টি করবে। এখন বাংলাদেশের ব্যাংকের এলসি কনফারমেশন দিতে চায় না বিদেশি ব্যাংকগুলো। কিন্তু যখন তারা জানতে পারবে যে, বাংলাদেশ আইএমএফের প্রোগ্রামের আওতায় রয়েছে, তখন তারা করবে। তার কারণ, আইএমএফ বাংলাদেশে কর্মসূচি নেওয়া মানে হচ্ছে আগামী ৩-৬ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ এমন কোনো সংকটে পড়বে না যে, বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে ব্যর্থ হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow