দুদকের সার্বিক কার্যক্রমে গতি আসবে, আশা কমিশনের

চলমান বছরের শুরু থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হটলাইন হতে শুরু করে সব ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে দ্রুততার সাথে অভিযান পরিচালনা করছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি। আগের চেয়ে দৈনিক অভিযানের সংখ্যাও বাড়িয়েছে কমিশন

Jan 22, 2023 - 11:03
 0
দুদকের সার্বিক কার্যক্রমে গতি আসবে, আশা কমিশনের
অভিযান ও দুদকের সার্বিক কার্যক্রমের বিষয়ে  দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ বলেনঃ সংগ্রহীত ছবি

চলমান বছরের শুরু থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হটলাইন হতে শুরু করে সব ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে দ্রুততার সাথে অভিযান পরিচালনা করছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি। আগের চেয়ে দৈনিক অভিযানের সংখ্যাও বাড়িয়েছে কমিশন।


অভিযান ও দুদকের সার্বিক কার্যক্রমের বিষয়ে  দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ বলেন, কমিশনের প্রতি সাধারণ মানুষের যে আস্থা সে কারণেই মানব দুদকে অভিযোগ করে প্রতিকার চায়। যে কারণে দুদক সেসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। নতুন বছরে এসব কার্যক্রম বেড়েছে, অভিযানের সংখ্যাও বেড়েছে।
কমিশনের সীমাবদ্ধতার বিষয় সামনে এনে মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ বলেন, কমিশন সর্বোচ্চ সেবা দিতে প্রস্তুত। আপনারা জানেন গত বছর আমার উপসহকারী ও সহকারী পরিচালক পদে বেশ বড় একটা নিয়োগ হয়েছে। প্রায় আড়াইশ কর্মকর্তা দুদকে নতুন জয়েন হয়েছে। ফলে কমিশনের সক্ষমতা বেড়েছে। কিন্তু আমরা দুদকের তফসিলভুক্ত না হওয়ার কারণে অনেক অপরাধের ব্যাপারে কাজ করতে পারি না।

আরও পড়ুনঃ বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত দুপুর ১২টায়


বেশিরভাগ নালিশ দুদকের তফসিলভুক্ত না হওয়ায় অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য স্বীকার করতে পারে না বলা হয় মনে করেন দুদক সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে মানিলন্ডারিং বিধানের তাদের এখতিয়ার সীমিত হওয়ার কারণে অনুসন্ধানের জন্য সব ধারণ করা যাচ্ছে না। এছাড়া দুদক বলছে মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অভিযোগের ক্ষেত্রে কমিশনের এখতিয়ার না বাড়ালে দুদকের জন্য কাজ করা কঠিন।
দুদক কমিশনার জহুরল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রত্যেকটি অভিযোগ নিয়ে কাজ করার জন্য চাই। কিন্তু অভিযোগগুলো কমিশন স্বীকার করার জন্য পারে না। কারণ ভিত্তিহীন নালিশের পরিমান প্রচুর বেশি। আবার নালিশের ১টি সুবিশাল অংশ কমিশনের তফসিলভুক্ত না হওয়াও ১টি কারণ। আমরা তফসিলে নেই এরূপ আরও বেশ কয়েকটি অভিযোগের এখতিয়ার চেয়ে আবেদন করেছি। সেগুলোর এখতিয়ার পেলে কমিশনের কাজের পরিধি এইরকম বাড়বে।
গত ২০২২ বর্ষের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক সালের অনুসন্ধান তদন্তের ওপর ভিত্তি করে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। দুদক থেকে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য মতে, গত এক বছর দুদকে ১৯ হাজার ৩৩৮টি অভিযোগ জমা পরে। অভিযোগ যাচাই বাছাই শেষে ৯০১ অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য স্বীকার করেছে সংস্থাটি, যা মোট অভিযোগের ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ।


২০১৭ হতে ২০২২ সাল পর্যন্ত গত ছয় সালের দুদকে জমা পড়া অভিযোগ ও অনুসন্ধানের পরিসংখ্যান বলছে, এ অর্ধযুগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অভিযোগ জমা পড়েছে ২০২২ সালে। করোনা পরের সময়ে সবচেয়ে বহু নালিশ এসেছে বছরটিতে। অুনসন্ধানের দিক থেকেও ছয় বর্ষের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন সংখ্যাক কমপ্লেইন খোজ করেছে সংস্থাটি।
দুদকেরে প্রতিবেদন হতে পাওয়া তথ্য বলছে, ২০২১ সালে সংস্থাটিতে অভিযোগ জমা পড়ে ১৪ হাজার ৭৮৯টি, অভিযোগ থেকে অনুসন্ধানের জন্য  করা হয়ে যায় ৫৩৩টি, যা মোট স্বীকৃত অভিযোগের ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। ২০২০ সালে ১৮ হাজার ৪৮৯টি অভিযোগ জমা পড়ে। অনুসন্ধানের জন্য স্বীকার করে ৮২২টি, যা মোট অভিযোগের ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। গত ছয় সালের মধ্যে সর্বাপেক্ষা কম এটিই।


একইভাবে ২০১৯ সালে ২১ হাজার ৩৭১টি কমপ্লেইন জমা পড়ে। যা গত ছয় বছরের সর্বোচ্চ। এ সময়ে সর্বোচ্চ সংখ্যাক অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য স্বীকার করা হয়েছে, এক হাজার ৭১০টি। যা সর্বমোট অভিযোগের ৮ শতাংশ। ২০১৮ সালে অভিযোগ জমা পড়ে ১৬ হাজার ৬০৬টি, অনসন্ধানের জন্য নেওয়া হয় এক হাজার ২৬৫টি (৭ দশমিক ৬১ শতাংশ) ও ২০১৭ সালে অভিযোগ পড়ে ১৭ হাজার ৯৮৩টি অুনসন্ধানের জন্য বরণ করা হয় ৯৩৭টি (৫ দশমিক ২১ শতাংশ)।


২০২২ সালে দুদকের শ্রেষ্ঠ কার্যালয়ে সরাসরি অভিযোগ জমা পড়েছে ১১ হাজার ৭৯৬টি যা সর্বমোট অভিযোগের ৬০ শতাংশ। সরকারী দফতর বা সংস্থা থেকে অভিযোগ আগত ৯৬৭টি, যা স্বীকৃত অভিযোগের ৫ শাতংশ, বেসরকারি কার্যালয় সংস্থা থেকে ৩৮৭টি (২ শাতংশ), পত্র-পত্রিকা বা টেলিভিশনের প্রতিবেদন হতে এক হাজার ৩৫৪টি (৭ শতাংশ), বিভাগীয় দফতর হতে এক হাজার ৫৪৭টি (৮ শতাংশ), এনফোর্সমেন্ট হতে ৫৮০টি ( ৩ শতাংশ) ও অন্যন্য দ্বারা ২ হাজার ৭০৭টি (১৪ শতাংশ)।


২০২২ সালে দুদক বিভিন্ন মামলায় আসামিদেরকে ২ হাজার ৬৩২ কোটি ৪১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৮৩ টাকা জরিমানা করে। এই সময়ে রাষ্ট্রের অনুকূলে আদালতের নির্দেশে ১৩ কোটি ৯৬ লাখ ১৯ হাজার ১৬৭ টাকা বাজেয়াপ্ত করে সংস্থাটি।

এছাড়াও গত এক বছরে ৫৮৫ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ১৫৬ ধনের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক কর কমিশন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow