জানাজার সময় ডাণ্ডাবেড়ি-হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো: তথ্যমন্ত্রী

Dec 21, 2022 - 16:51
 0
জানাজার সময় ডাণ্ডাবেড়ি-হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো: তথ্যমন্ত্রী
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে সকাল ১০টায় নিজস্ব বাড়ির সাইডে মায়ের জানাজাস্থলে উপস্থিত হন আলী আজম।

মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার সময় বিএনপি নেতা মো. আলী আজমের হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দিলে ভালো হতো বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় প্যারোলে মুক্তি নিয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নেন উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম। এসময় তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরানো ছিল। আজ বুধবার সচিবালয়ে তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন ঘরে সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী এরূপ অভিমত দেন।

আলী আজমের মা সাহেরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে  রোববার বিকালবেলা মৃত্যুবরণ করেন। মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে প্যারোলে রেহাই পেয়ে নিজ বাড়ি কালিয়াকৈরের পাবুরিয়াচালা এলাকায় জানাজায় উপস্থিত হন আলী আজম।

আরও পড়ুনঃ দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালোই আছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বজনরা জানান, শেষবার মাকে দেখতে ও মায়ের জানাজা নিজে পড়াতে আইনজীবীর মাধ্যমে গত সোমবার বিকেলে গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন আলী আজম। তা সত্ত্বেও ওইদিন দাপ্তরিক কাজ শেষ না হওয়ায় মঙ্গলবার তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে খালাস মেলে তার।

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্যারোলে মুক্তি পেয়ে সকাল ১০টায় নিজস্ব বাড়ির সাইডে মায়ের জানাজাস্থলে উপস্থিত হন আলী আজম। বেলা ১১টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মাতার দাফন শেষে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পুরোটা সময় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন তিনি। এ ঘটনা তুলে ধরে সাংবাদিকরা তথ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, জানাজার সময় হাতকড়া-ডান্ডাবেড়ি থাকার ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের বক্তব্য, সরকার এতটা ‘অমানবিক’ না হলেও পারতো।

জবাবে ড. হাছান বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে চেক করেছি। আমি গাজীপুরের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। ডান্ডাবেড়ি বা হাতকড়া পরানো না পরানো হচ্ছে জেল প্রশাসনের কাজ। সেটি আবার পুলিশের অধীনে নয়। একজন আইজি প্রিজন রয়েছেন সেই প্রশাসনের অধীনে। আমাদের পুলিশের যে মহাপরিদর্শক, তাদের অধীনেও নয়। ডান্ডাবেড়ি অথবা হাতকড়া কয়েদ প্রশাসনই পরায়। আমি বিষয়টি চেক করেছি, তাকে প্যারোলে কয়েক ঘণ্টার জন্য মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, কয়েকদিন প্রথমে কয়েকজন জঙ্গি পালিয়ে গেছে। তাদের বিষয়ে যেভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা চাই ছিল সেটা করা হয়নি বিধায় তদন্তে উঠে আগত ও তারা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এইজন্য তারা (গাজীপুরে) অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। আমি এসপি পর্যায়েও কথা বলেছি, তারা বিষয়টি জানতেন না। যারা বিএনপি নেতাকে কেরি (বহন) করে এনেছিল, শুধু তারাই জানতেন; অন্যরা কেউ জানতেন না। তবে আমি মনে করি জানাজার সময় ডান্ডাবেড়ি এবং হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো।

সাংবাদিকদের আরেক এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে সব দলকে নির্বাচনমুখী করা। এটা নির্বাচন কমিশনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। আমরাও প্রয়োজন সমস্ত রাজনৈতিক দল ইলেকশনে অংশগ্রহণ করুক। বিএনপিসহ সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ১টি প্রতিযোগিতামূলক, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক- সেটি আমরাও চাই।

তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না, সেটি একান্তই তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে একটি কথা আছে,  জল ঘোলা করে খায়। বিএনপি যেমন ১০ তারিখ পানি ঘোলা করে নয়াপল্টনের সভা গরুর হাটের ময়দানে (গোলাপবাগ মাঠে) করেছে, এক্ষেত্রেও আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিএনপি নির্বাচনে আসবে তাদের দল টিকিয়ে রাখার স্বার্থে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow