এবার শতাধিক মিসাইল ছুড়লো রাশিয়া, নিহত ৮

ইউক্রেনে আবারও মিসাইল বৃষ্টি! বলা হচ্ছে, এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের উপরে সবথেকে ভয়াবহ মিসাইল হামলা। শতাধিক মিসাইল ঘা হেনেছে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি কেন্দ্রগুলোতে। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে রাজধানী কিয়েভসহ প্রধান শহরগুলো। মঙ্গলবার হঠাত করেই যেনো রেগে গেলো রাশিয়া। মিসাইল ও ড্রোন নিয়ে বেছে বেছে ইউক্রেনের বিভিন্ন লক্ষ্য বিনাশ করেছে দেশটি। এতে একজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। এছাড়া আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার অভিযোগও তুলেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিচকো জানান, শহরের পেচেরস্ক এলাকার তিনটি আলয়ে আঘাত হানা হয়েছে। এ হামলা এরূপ এক সময়ে হলো যখন ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন হতে বিশ্ব নেতারা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ অভিযানের নিন্দা জানিয়েছেন। ঐ সম্মেলনে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ১টি বিমানে চড়ে বালি ত্যাগ যাওয়ার পর পর এ হামলা চলে বলে বার্তা পাওয়া গেছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, বরাবরের মতো এবারও কিয়েভ অনেকগুলো মিসাইল ভূপাতিত করার দাবি করেছে। যদিও কমপক্ষে ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বিনাশ হয়ে গেছে বলে  হয়েছে দেশটির তরফ থেকে।

আরও পড়ুন : দাম বেড়েছে পেঁয়াজ চিনি ও মসলার, সবজি স্থিতিশীল

                     ঝিনাইদহে বিএনপির বিজয় র‍্যালিতে হামলা, আহত ৫

এসব হামলার পর সারা দেশে বিমান হামলার সতর্কতা জারি করা রয়েছে। মিকোলায়েভ এবং ওডেসাসহ অন্য শহরেরও কয়েকদফা মিসাইল আক্রমণ হয়েছে। খারকভ এবং  লাভভ শহরেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। লাভভের কয়েকটি অঞ্চলে তড়িৎ চলে গেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, সারা দেশে রাশিয়া প্রায় ৮৫টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। আরও ২০টি ঘা হানতে পারে বলে হুঁশিয়ার করেছেন। পরে রাতে আরেক এক আপডেটে ইউক্রেনীয় গণমাধ্যমগুলো একশ মিসাইল নিক্ষেপের কথা জানায়। চেরনিহিভের  ভিয়াচেস্লাভ চাউস মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে সতর্ক করে বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রয়েছে।

জি-২০ ডগা সম্মেলনে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের কড়া নিন্দা করে সেখানে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার বা ব্যবহারের হুমকিকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পুতিনের পরিবর্তে ঐ সম্মেলনে যোগদানকারী রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো জি-২০ জোটের এ ইস্তাহারকে রাজনীতিকীকরণ করার চেষ্টা করেছে। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে এ সম্মেলনে বিশ্ব অর্থনীতি ও বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহের ওপর ইউক্রেন যুদ্ধের যে প্রভাব পড়েছে, তা ছিল আলোচনার অন্যতম প্রধান বিষয়। এর যে খসড়া ঘোষণাটি সাংবাদিকরা দেখেছেন তাতে বলা হয়, জি-২০’র  টুয়েন্টির অধিকাংশ সদস্যই রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানের কড়া নিন্দা করছে ও সেখানে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার বা ব্যবহারের হুমকিকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলা হয় বর্ণনা করা হয়। 

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এই সম্মেলনে ভিডিও লিংকের দ্বারা কথন দিয়েছেন। তাতে উনি বলেন তার দেশের বিরুদ্ধে মস্কোর এই সংঘাত বন্ধ করা সম্ভব এবং তা করতে হবে। তিনি জোর কর্তৃক বলেন, রাশিয়াকে ইউক্রেনের  ভূখ- হতে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে ও খেসারত দিতে হবে। বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী যোগী সুনাকও রাশিয়ার এ যুদ্ধের প্রবল নিন্দা করেছেন ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে সরাসরি বলেছেন যে তার দেশের উচিত ইউক্রেন ত্যাগ করা। ল্যাভরভ দাবি করেন, ইউক্রেন নিজেই আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ও অবাস্তব দাবিদাওয়া তুলছে। ফলে রাশিয়ার পক্ষে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।