শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে টাইগারদের সিরিজ জয়
মেহেদী হাসান মিরাজ, সম্ভবত গত তিন-চারদিনে বাংলাদেশের ক্রিকেটপাড়ায় সবচেয়ে আলোচিত নাম। আর এমনটা হবে না-ই বা কেন! ভারতের বিপক্ষে গত দুই ম্যাচে কী করেননি ডানহাতি এ অলরাউন্ডার। দলের বিপদের সময় ব্যাট হাতে খেলেছেন ম্যাচজয়ী সব ইনিংস। আবার বল হাতেও প্রয়োজনের সময় এনে দিয়েছেন উইকেট। আর ২৫ বছর বয়সী এ ক্রিকেটারের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ভারতকে স্তব্ধ করে দিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।
বিজয়ের জন্য সমাপ্ত দুই ওভারে ভারতের দরকার ছিল ৪০ রান। রোহিত শর্মার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে জয়ের দ্বারপ্রান্তেই অবস্থান করছিল সফরকারীরা। তা সত্ত্বেও মোস্তাফিজুর রহমানের অসাধারণ নৈপুন্যে সম্পন্ন বলে ভারতকে হারাল বাংলাদেশ। আর তাতেই ৫ রানের জয় নিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল টাইগাররা। ম্যাচের প্রথমে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৭১ রান তুলে স্বাগতিকরা। জবাবে ২৬৫ রানে থেমেছে সফরকারীরা।
রান তাড়া করতে নেমে দলকে ভালো সূচনা এনে দিতে পারেননি দুই ওপেনিং ব্যাটার শিখর ধাওয়ান ও বিরাট কোহলি। ৫ রানে কোহলি এবং ৮ রানে সাজঘরের পথ ধরেন আগা ধাওয়ান। আর আউট হওয়ার পূর্বে মাত্র ১১ রান তুলতে পেরেছেন ওয়াশিংটন সুন্দর। লোকেশ রাহুলের ব্যাট থেকে আসে ১৪ রান।
মাত্র ৬৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসা ভারত টিমের দশা ধরেন শ্রেয়াস আয়ার। তার সঙ্গ দেন অক্ষর প্যাটেল। এ সময় দুজন মিলে গড়েন ১০৭ রানের জুটি। তাতেই জয়ের স্বপ্ন দেখে ভারতীয় শিবির। এই দুই ব্যাটারই অর্ধশতকের লক্ষ্য পান। ৮২ রানে আয়ার ও ৫৬ রানে প্যাটেল আউট হন। শেষ পর্যন্ত সংঘাত করে যান ভারতীয় দলনেতা রোহিত শর্মা। অথচ দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। অপরাজিত থাকেন ৫১ রানে।
এর আগে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশি অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। ব্যাট হাতে শুরুটা মোটেই অনেক ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। ব্যক্তিগত ১১ রানে আউট হন ওপেনার এনামুল হক বিজয়। অন্য ওপেনার লিটন কুমার দাসের ব্যাট থেকে এসেছে কেবল ৭ রান। ৮ রান করে আউট হন সাকিব আল হাসান।
নাজমুল হাসান শান্তর ব্যাটে আশার শিখা দেখতে থাকে বাংলাদেশ শিবির। তা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত ইনিংসটা খুব বহু সুবিশাল করতে পারেননি বা-হাতি এ ব্যাটার। ৩৫ বলে ২১ রান করে আউট হন তিনি। ১২ রান করতে পেরেছেন উইকেটকিপার ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। আর রানের খাতায় খুলতে পারেননি আফিফ হোসেন ধ্রুব।
মাত্র ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারালে মনে হচ্ছিল একশও করতে পারবে না টাইগাররা। এমন সময় সপ্তম উইকেট জুটিতে অসাধারণ ব্যাট করে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদি হাসান মিরাজ। দুজন মিলে গড়েন ১৪৮ রানের জুটি। এই দুই ব্যাটারই অর্ধশতকের নোটিশ পান। ৯৬ বলে ৭৭ রান করে সাজঘরের রাস্তা ধরেন রিয়াদ।
এদিকে নাসুম হোসেনকে নিয়ে সম্পন্ন পর্যন্ত খেলে যান মিরাজ। নিজের ফিফটিকে রূপ দেন সেঞ্চুরিতে। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে এটিই তার ১ম শতরানের ইনিংস। উনি অপরাজিত থাকেন ১০০ রানে। মাত্র ৮৩ বলে খেলা তার এ ইনিংসটি আটটি চার এবং চারটি ছয়ে সাজানো। এদিকে ১১ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন নাসুম আহমেদ।
What's Your Reaction?