সাকিবের মতো ক্রিকেটারকে লম্বা সময় চান ডমিঙ্গো
ইন্ডিয়ার বিপক্ষে সিরিজের ১ম ম্যাচে অসাধারণ জয়ের পর অবশ্য বাংলাদেশ দল রয়েছে ফুরফুরে মেজাজে। যার চিত্র দেখা গেছে মঙ্গলবার বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে। কিন্তু গেল ম্যাচে বল হাতে দুর্দান্ত করা সাকিব আল হাসান অবশ্য এদিন ছিলেন ওয়ার্ম-আপেই ব্যস্ত। দ্বিতীয় ওয়ানডের আগের দিন সাকিব বন্দনাতেই মাতলেন বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
মঙ্গলবার নির্ধারিত সময়ের মিনিট ত্রিশেক পর মিরপুরের মাঠে বার্তা সম্মেলনে আসেন ডমিঙ্গো। কথা বলার এক অবস্থায় আগের ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়া সাকিবের প্রসঙ্গে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন তিনি। সাবেক আফ্রিকান এ কোচ বললেন, ‘দিনশেষে সাকিব অবিশ্বাস্য। আমি দক্ষিণ আফ্রিকায় অনেকদিন কোচিং করিয়েছি। জ্যাক ক্যালিস অবসর নেওয়ার আট বছর পরও আমার মনে হয় তারা ওরকম বিকল্প খুঁজছে। তারা নিশ্চিত হতে পারছে ছয় ব্যাটার খেলাবে নাকি সাত। অতিরিক্ত বোলার খেলাবে নাকি ব্যাটার।’
ডমিঙ্গো আরো যোগ করেন, ‘এমন ক্রিকেটারের বিকল্প পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। যদি সে ভালো না ব্যাট করে, ভালো বল করবে। খারাপ বল করলে ব্যাট হাতে পারফর্ম করবে। এই ধরনের ক্রিকেটার প্রচুর কম, এজন্যই তারা স্পেশাল। আমরা তাকে যতদিন সম্ভব রাখতে চাই। সে যেন ফ্রেশ থাকে এটা নিশ্চিত করতে চাই।’ সাকিবকে যতদিন সম্ভব ততদিন বাংলাদেশের হয়ে দেখতে চান ডমিঙ্গো। এই সময়ে মিরাজের প্রসঙ্গ টেনে ডমিঙ্গো বললেন, ‘যতদিন সম্ভব তাকে বাংলাদেশের হয়ে দেখতে চাই। মিরাজ কি তেমন থেকে পারে? হয়তো। সে পাঁচণ্ডছয়ে ব্যাট করতে পারে। বল হাতেও ধারাবাহিক পারফর্ম করে।’ টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে কিছু ইনিংস খেললেও ওয়ানডেতে একদম নিষ্প্রভ নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট। বারবার সুযোগ পেয়েও একদিনের ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি এ বাঁহাতি। ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ানডেতে টিম জিতলেও শান্ত পান ‘গোল্ডেন ডাক’। সঠিক আগের ওয়ানডেও প্রথম বলেই আউট হয়েছিলেন তিনি। এ ব্যাটারের নড়বড়ে জায়গার পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকান কিংবদন্তি জ্যাক ক্যালিসের উদাহরণ টানলেন বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। এখনো পর্যন্ত ১৪টি ওয়ানডে খেলে ১৩.৫০ গড়ে স্রেফ ১৮৯ রান আছে শান্তর। তার স্ট্রাইকরেটও মোটে ৬০.৯৬। সর্বশেষ দুই ম্যাচেই আউট হয়েছেন ১ম বলে।
দলে ইয়াসির আলি রাব্বি থাকতেও শান্তকে খেলানো ১ম যুক্তি ডান-বাম সমন্বয়। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই বললেন বাংলাদেশের কোচ, ‘আমি ডান-বাম সমন্বয় পছন্দ করি। তাকে দেখে মনে শ্বেত বলে সে ভিত খুঁজে পাচ্ছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সে দুইটি ফিফটি করেছে।’ এরপরই ক্যালিসের কথা টেনে শান্তর পক্ষে কথা বলেন ডমিঙ্গো, ‘ক্যারিয়ারের প্রথম ১২ টেস্টে জ্যাক ক্যালিসের গড় ছিল ১২ (আসলে ২৫.৪৭)। পরে সে বিশ্বের সবসময়ের সেরাদের একজন হয়ে ওঠে। শান্তর আরো ধারাবাহিক পারফর্ম করতে হবে। তবুও সে বেশ কিছু শক্ত উইকেটে খেলেছে। কিছু খেলোয়াড়কে নিয়ে আপনার ধৈর্য ধরতে হবে। ১২টা (আসলে ১৪) ওয়ানডে প্রচণ্ড বেশি খেলা না। সে অনেক ভালো টিমের সাথে কঠিন উইকেটে খেলেছে।’ ডমিঙ্গোর দেওয়া তথ্যে অবশ্য আছে কিছুটা ভুল। ১ম ১২ টেস্টের ভিতরে অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ক্যালিস পেয়েছিলেন সেঞ্চুরিও। প্রথম ১৬টি ওয়ানডেতে তার ছিল তিন ফিফটি। ক্যালিসের উদাহরণটা ঠিক খাপ খায়নি।
৬ ওয়ানডেতে সুযোগ পেয়ে ৬৭ রান করেছেন ইয়াসির। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪৪ বলে তার রয়েছে ১টি ফিফটি। তবু ইয়াসিরের বদলে শান্তকে খেলানোর যুক্তি তুলে ধরলেন ডমিঙ্গো, ‘রাব্বি দক্ষিণ আফ্রিকার পর আর ওয়ানডে খেলেনি। সে চোটেও পড়েছে। মিরপুরের নিউ বল সামলানোটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি সাকিবকে (শান্ত না খেললে সাকিবকে তিনে নামতে হবে) নতুন বলে ১ম দিকে তিন-চার ওভার দূরে রাখতে চাই। বল পুরোনো হলে সাকিব অবিশ্বাস্য খেলোয়াড়।
What's Your Reaction?