নৌযান শ্রমিক ধর্মঘটের প্রথম দিনে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ

ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা মজুরি প্রদান সহ ১০ দফা

দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চালু করেছে নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ। 

গতকাল শনিবার মধ্যরাত হতে চালু হওয়া এই কর্মবিরতিতে স্থানীয় এবং দূরপাল্লার রুটের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। অফ রয়েছে পণ্য পরিবহন। 

দাবি উশুল না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নৌযান শ্রমিকরা। তবে এই মুহূর্তে কর্মচারীদের দাবি মেনে নেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন নৌযান মালিক সমিতির নেতারা।

রবিবার সকালে বরিশাল প্রবাহিনী বন্দরে গিয়ে নানারকম গন্তব্যের যাত্রীদের দেখা গেছে। নৌযান বন্ধ থাকায় গন্তব্যে যেতে না পেরে ফিরে গেছেন অনেকে। অনেকে আবার বিকল্প ব্যবস্থায় এক্সট্রা টাকা-পয়সা ব্যয় করে গন্তব্যে গেছেন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তারা নৌযান ধর্মঘট বন্ধে কার্যকর আয়োজন নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ভোলা যাওয়ার উদ্দেশ্যে লঞ্চ ঘাটে আসা যাত্রী মো. আতিকুল্লাহ জানান, অফিসিয়াল কাজে ভোলায় যেতে হবে। আজকাল লঞ্চ না চলায় দুর্ভোগে পড়ে গেলাম। অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে বিকল্প রাস্তায় যেতে হবে।

মেহেন্দিগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্যে নদীবন্দরে আসা যাত্রী শহিদুল ইসলাম জনান, জানা ছিল না যে আজকে ধর্মঘট। এটি দুঃখজনক আজকে লঞ্চ, কালকে বাস ধর্মঘট এইরকম চলতে থাকলে তো জনগণের দুর্ভোগের সম্পন্ন নাই। এইরকম অনাকাঙ্খিত ধর্মঘট অফ করার সরকারের প্রতি সম্ভাষণ জানান তিনি।

বারবার বেতন বৃদ্ধির জন্য আস্থা দেয়া হলেও নৌযান কর্মচারীদের বেতন বাড়েনি বলা হয়ে থাকে কমপ্লেইন ওয়ার্রকার নেতাদের। এই যাত্রায় দাবি সংগ্রহ না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন তারা।

বরিশাল বিভাগীয় নৌযান ওয়ার্রকার সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম জানান, নৌযান কর্মচারীদের এ দাবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিতে চাই। তিনি নৌযান শ্রমিকদের বিষয়টি বিচার করবেন। শ্রমিকদের ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা মজুরি প্রদান সহ ১০ দফা বাস্তাবায়ন করার কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার এসোসিয়েশনের বরিশাল বিভাগের সভাপতি শেখ আবুল হাশেম জানান, যৌক্তিক দাবিতে শ্রমিকদের কর্মবিরতি আরম্ভ হয়েছে। চুক্তি করেও তা বাস্তবায়ন করেনি রাষ্ট্রশাসক গোষ্ঠী ও মালিক পক্ষ। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলবে।

এদিকে, কর্মচারীদের কর্মবিরতির বিষয়ে লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌস বলেন, শ্রমিকদের দাবি মেনে দুই বছর প্রথমে চুক্তি হয়ে গিয়ে ছিল যে আগামী পাঁচ সালের তারা কোন আন্দোলন-সংগ্রাম করবে না। তবুও দুই বছর না যেতেই আন্দোলন শুরু করেছে তারা। আজকাল জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় লঞ্চ পরিচালনায় লোকসান হলো বলা হয় দাবি তাদের। এই মুহূর্তে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়া পসিবল নয় বলা হয় জানিছেন তিনি। 

বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলা থেকে রাজধানীতে যাতায়াতের সেরা মাধ্যম নৌ পথ। এছাড়াও বরিশাল থেকে ইন্টারনাল ১২টি রুটে চলাচল করে যাত্রীবাহী নৌযান। শ্রমিক ধর্মঘটে অফ বিদ্যমান পণ্যবাহী নৌযান চলাচলও।