ভবন নির্মাতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু তুরস্কে
গত সোমবারের (৬ ফেব্রুয়ারি) শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধসেপড়া এসব ভবনগুলোর বেশির ভাগই গত কয়েক বছরে নির্মাণ করা। নবনির্মিত এসব ভবন ভূমিকম্পে ধসেপড়া নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে জনমনে। অভিযোগ ওঠেছে, এসব ভবন নির্মাণের সময় যথাযথ আইন মানা হয়নি।
গত সোমবারের (৬ ফেব্রুয়ারি) শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধসেপড়া এসব ভবনগুলোর বেশির ভাগই গত কয়েক বছরে নির্মাণ করা। নবনির্মিত এসব ভবন ভূমিকম্পে ধসেপড়া নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে জনমনে। অভিযোগ ওঠেছে, এসব ভবন নির্মাণের সময় যথাযথ আইন মানা হয়নি।
সম্প্রতি নির্মাণ করা ভবন ধসে পড়ার অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সেখানে এসব অভিযোগের বেশির ভাগেরই সত্যতা পাওয়া গেছে।
এসব ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি ছিল কিনা— নিশ্চিত হতে ভবন নির্মাতাদের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে তুরস্কের আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বেকির বোজদাগ শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের চিফ পাবলিক প্রসিকিউটরের দপ্তর কাহরামানমারাশ ও অন্যান্য উপদ্রুত প্রদেশের ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। যদি সরকারি নির্দেশনা মেনে ভবনগুলো নির্মাণ করা হতো, তাহলে নিশ্চিতভাবেই এত প্রাণহানি আমাদের দেখতে হতো না।’
তুরস্কের ইউনিয়ন অব চেম্বারস অব টার্কিশ ইঞ্জিনিয়ারস এবং আর্কিটেক্টস চেম্বার অব সিটি প্ল্যানার্সের ইস্তাম্বুলের প্রধান পেলিন পাইনার গিরিতলিওগলু জানিয়েছেন, সোমবারের ভূমিকম্পে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর প্রায় ৭৫ হাজার ভবন ওই ক্ষমার আওতায় এসেছিল।
________________________________________________________________________
আরও পড়ুনঃ তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প : নিহতের সংখ্যা ২৩ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে
________________________________________________________________________
বিপর্যয়ের কয়েক দিন আগে তুর্কি গণমাধ্যম জানিয়েছে, একটি নতুন খসড়া আইন পার্লামেন্টে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। সেটি অনুমোদন পেলে পুরোনো ভবনের পাশাপাশি সাম্প্রতিক নির্মাণ করা ভবনগুলোও নিয়ম না মেনে নির্মাণের পর ক্ষমার সুযোগ পাবে।
সোমবার ভোরে তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৮। যদিও এ মাত্রার ভূমিকম্প খুবই শক্তিশালী। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবনগুলো যদি মান বজায় রেখে নির্মাণ করা হতো, তাহলে এ ভূমিকম্পের পরও সেগুলো টিকে থাকার কথা ছিল।
১৯৯৯ সালে তুরস্কের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই দুর্যোগে নিহত হয়েছিলেন ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। তারপর দেশজুড়ে ভূমিকম্প সহনশীল ভবন নির্মাণের আদেশ জারি করেছিল তুরস্কের কেন্দ্রীয় সরাকর। ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সম্পর্কিত নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল।
সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও তার প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া। ওই ভূমিকম্পের ১৫ মিনিট পর ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি বড় ভূমিকম্প এবং পরে অনেকগুলো আফটারশক হয়।
What's Your Reaction?