দুদিন ধরে ডাক্তার নেই ওয়ার্ডে
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) পুরাতন ভবনের চারতলায় ইউরোলজি বিভাগের একটি ওয়ার্ডে দুদিন ধরে ডাক্তার আসেননি বলে অভিযোগ করেছেন চিকিৎসাধীন রোগী ও স্বজনরা।
এছাড়া ওয়ার্ডের চিকিৎসাধীন রোগীর অধিকাংশই অপারেশনের (ওটি) জন্য মাসের পর মাস অপেক্ষায় আছেন। রোগীর ওটির প্রয়োজনীয় ওষুধসহ জিনিসপত্রও কিনতে হয় বাইরের দোকান থেকে।
রোববার (১২ মার্চ) এসব অভিযোগ করেন ভর্তি রোগী ও তাদের স্বজনরা। ইউরোলজি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, ওয়ার্ডে ১৮টি বেডে ১৮ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার মধ্যে সদ্য অপারেশনের রোগীও আছেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে ওই রোগী ডাক্তারের দেখা পাননি। এতে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত নার্সরাও।
ওই ওয়ার্ডের পাশের এক রোগী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, আমি এখানে ২৪ দিন ধরে ভর্তি হয়ে আছি। আমার অপারেশন হবে। কিডনিতে পাথর হয়েছে। এখনো সিরিয়াল পাইনি। সপ্তাহে প্রতি বৃহস্পতিবার তিন থেকে চারজন রোগীর অপারেশন হয়। ডাক্তার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন স্যার তিনি অপারেশন করেন। শুনেছি তিনি অসুস্থ তাই আসতে পারেননি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জাহাঙ্গীর স্যার অসুস্থ তাই তিনি আসতে পারেন না। কিন্তু হাসপাতালের তো দায়িত্ব আছে। অন্য কোনো ডাক্তার দিয়ে হলেও একটা রাউন্ড তো করাতে পারেন। আমরা তো চিকিৎসা নিতে আসছি। গত তিন-চার দিন ডাক্তার আসেন না। এখানে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ রোগী আছেন। তাদের অবস্থাও খারাপ।
ইউরোলজি বিভাগের তিন নম্বর পুরুষ ওয়ার্ডের জুনিয়র স্টাফ নার্স (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ওয়ার্ডের ডাক্তার কেন নেই এ বিষয়ে অফিশিয়াল কোনো নোটিশ আমরা পাইনি। আমরা রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে ইউরোলজি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, এই বিভাগে আমি আছি রেজিস্ট্রার হিসেবে। আরও দুজন আছেন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, তার মধ্যে একজন এক মাসের ছুটি নিয়েছেন। আরেকজন আরএস আছেন, তিনি আউটডোর দেখেন। তবে এখানে তিনজন ডাক্তার দিয়ে বিভাগ চালানো যায় না। গত শুক্রবার আমি বাইক অ্যাক্সিডেন্ট করি। তাই এক সপ্তাহের বিশ্রামে থাকতে হবে। আমার অনুপস্থিতিতে ইন্টার্নি ডাক্তাররা দেখেন। ওদের সঙ্গে আমার ফোনে যোগাযোগ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তিন নম্বর ওয়ার্ডে (পুরুষ ইউরোলজি বিভাগ) ১০টি পুরুষ বেড এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডে (মহিলা ইউরোলজি বিভাগ) ১০টি মহিলা বেড আছে। তবে রোগীর চাপে ৪০টি রোগী থাকেন সব সময়। প্রতি বৃহস্পতিবার তিন-চারজনের অপারেশন হয়।
এ বিষয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) সহকারী পরিচালক ডা. এস এম মনিরুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ডাক্তার না থাকার বিষয়টি আমাদের নজরে আসেনি। আপনার কাছে শুনেছি। তবে ওই ওয়ার্ডে ডা. জাহাঙ্গীর সাহেব ছাড়াও অন্য চিকিৎসকরা রয়েছেন, তারা এ বিষয়টি আমাদের জানাননি। দ্রুত ইউরোলজি বিভাগের প্রধানের সঙ্গে কথা বলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
What's Your Reaction?