ঢাকায় নেমেই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সারলেন ডোনাল্ড লু
দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মধ্য এবং দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মধ্য এবং দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। তারা ঢাকা-ওয়াশিংটনের দ্বিপাক্ষিক ও পারস্পরিক প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ইউক্রেনজুড়ে লোডশেডিং
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্কাটনের বাসায় নৈশভোজে অংশ নেন লু। এসময় তার সাথে ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। নৈশভোজের পর মোমেন-লু বৈঠকে মিলিত হন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৈঠকের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো কোনো তথ্য দিতে পারেনি। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে, দ্বিপাক্ষিক এবং পারস্পরিক দরকার সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা।
এর আগে, সন্ধ্যায় লু ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমেরিকাস অনুবিভাগের মহাপরিচালক নাঈম উদ্দিন আহমেদ বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইনফরমেশন বলছে, রোববার ১৫ জানুয়ারি পররাষ্ট্র-সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন লু। সে বৈঠক নিয়ে কূটনৈতিক সূত্রগুলোর তথ্য বলছে, বৈঠকে র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং নতুন করে যাতে আর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা না হয়, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুনঃ শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে, গণতন্ত্র, নির্বাচন, মানবাধিকার, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, জিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও ঢাকায় দেশটির কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়ার জন্য পারে।
কূটনৈতিক সূত্র এইরকম বলছে, লু’র সফরে উভয়পক্ষ দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে যার যেটার অগ্রাধিকার ইস্যুগুলো আলোচনার টেবিলে জায়গা পাবে। ঢাকার পক্ষ হতে স্থান পাবে র্যাবের ওপর হতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, জিএসপি সুবিধা পুনরায় চালু, ব্যবসা-বাণিজ্য, শ্রম কর্তৃত্ব ও মানবাধিকার সুরক্ষায় সরকারের নানারকম উদ্যোগ, অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ, ভিয়েনা সনদ অনুসারে কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো।
আরও পড়ুনঃ আজ মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি নিহতের ঘটনাটি তুলে ধরবে ঢাকা। আরও থাকবে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরানোর মতো বিষয়টিও।
আশা করা হচ্ছে, লু বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু ইলেকশন এবং সব দলের অংশগ্রহণের বার্তা দেবেন। পাশাপাশি মানবাধিকার পরিস্থিতি, গুম, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলসহ নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিশেষ করে জিসোমিয়া ও আকসার মতো চুক্তিতে বাংলাদেশ যেন যুক্ত হয়।
উল্লেখ্য, গত ৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র গর্ভনমেন্টের হয়ে পররাষ্ট্র কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন ডোনাল্ড লু। ২০২১ বর্ষের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর (অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি) দায়িত্ব পান লু। এর আগে এই এলাকায় একাধিক দেশে সফর করলেও ঢাকায় এটিই তার ১ম সফর।
What's Your Reaction?