চট্টগ্রামে আগুনে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু
আশিক এলাহী, রাঙ্গুনিয়া: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় রান্না ঘর থেকে সৃষ্ট আগুনে পুড়ে একই পরিবারের ঘুমন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় আহত হয়েছেন আরও একজন। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি ২৩) উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহাজন পাড়া এলাকায় গভীররাত ১টা ৪০ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. একতেহার হোসেন।
নিহতরা হলেন- কাঙ্গাল বসাক (৬৮), ললিতা বসাক (৫৭), লাকী বসাক (৩৩), সৌরভ বসাক (১২), শায়ন্তি বসাক (৬)। আহত একজনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে পারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. একতেহার হোসেন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমাকে রাত ১টা ৪০ মিনিটে ফোন দেয়া হয়। তাৎক্ষণিক, আমি ফায়ার সার্ভিস ও থানায় ফোন করে বিষয়টি জানায়।
আরও পড়ুনঃ ‘ভোটার হওয়া ব্যতীত এনআইডিতে ইসির সংশ্লিষ্টতা নেই’
অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) ও রাঙ্গুনিয়া থানার ওসিসহ পুলিশ ফোর্স এবং ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় জনতাসহ সকলের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় বসত ঘরের জানালার গ্রিল কেটে আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ৫ ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। অগ্নিকাণ্ডে খোকন বসাকের মালিকানাধীন সিএনজি অটো রিকশাটিও সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়।
এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভেতরে আটকে পড়া দুই শিশুসহ পাঁচজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধারের চেষ্টা করি। কিন্তু তার আগেই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হওয়ায় তাদের মৃতদেহই উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বসতঘর সংলগ্ন রান্নাঘরের চুলার আগুন থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে থাকতে পারে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।
আরও পড়ুনঃ প্রতিযোগিতামূলক সংসদ নির্বাচন হবে: প্রধানমন্ত্রী
উদ্ধারকর্মী ও স্থানীয় সূত্র হতে জানা যায়, পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক খোকন বসাক বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে সেমিপাকা (পাকা ওয়াল ও টিনশেড) ঘরে বসবাস করতেন। তিন কক্ষবিশিষ্ট ঘরটিতে বহির্গমণ দরজা ছিল মাত্র একটি। সেই বহির্গমণ দরজা সন্নিহিত ছিল তাদের রান্নাঘর। স্থানীয়দের ধারণা, রান্না ঘরের চুলা থেকে আগুন লেগে সেখানে মজুদকৃত বিপুল পরিমাণ কাঠের লাকড়ির মাধ্যমে তা পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু বহির্গমণ দরজা ছিল একটাই, আর সেটা ঘিরেই ছিল আগুনের মূল উৎসস্থল, তাই ভাগ্যগুণে গৃহকর্তা খোকন বসাক আহত অবস্থায় বের হতে পারলেও ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা ঘরের অন্য বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা বের হতে পারেননি।
পুরো পরিবার আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।
What's Your Reaction?