রিজার্ভ চু‌রির মামলার রায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে : নিউইয়র্কের আদালতে

ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) সহযোগিতায় বাংলা‌দেশ ব্যাং‌কের রিজার্ভ চু‌রি হ‌য়ে‌ছে। এজন্য রিজার্ভ চুরির ঘটনায় আরসিবিসিসহ অভিযুক্ত ছয়জনের দায়ের করা মামলা  করে দিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে রায়

Jan 16, 2023 - 21:01
 0
রিজার্ভ চু‌রির মামলার রায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে : নিউইয়র্কের আদালতে
সোমবার (১৬ জানুয়া‌রি) আর্থিক গেয়েন্দা কোম্পানি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এর সর্বশ্রেষ্ঠ মাসুদ আস্থা এই তথ্য জানিয়েছেন : সংগ্রহীত ছবি

ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) সহযোগিতায় বাংলা‌দেশ ব্যাং‌কের রিজার্ভ চু‌রি হ‌য়ে‌ছে। এজন্য রিজার্ভ চুরির ঘটনায় আরসিবিসিসহ অভিযুক্ত ছয়জনের দায়ের করা মামলা  করে দিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক প্রিয় কোর্ট (স্টেট কোর্ট)। ফলে রিজার্ভের অর্থ ফেরত পেতে বাংলাদেশের করা মামলা পরিচালনায় আর কোনো বাধা রইলো না। কিন্তু আরসিবিসিসহ অন্যান্য ১৮ লোক বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের  মামলা রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ২৫ জানুয়ারি সারাদেশে মহানগর ও জেলায় বিএনপির সমাবেশ

সোমবার (১৬ জানুয়া‌রি) আর্থিক গেয়েন্দা কোম্পানি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এর সর্বশ্রেষ্ঠ মাসুদ আস্থা এই তথ্য জানিয়েছেন। বিএফআইইউ জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হতে অর্থ চুরির ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিবেচনায় ২০১৯ বছরের ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ফর দি সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব নিউইয়র্কে (ফেডারেল কোর্ট) আরসিবিসিসহ ২০ লোক ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। পরে আরসিবিসিসহ ৬ মানুষ এবং প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের মামলা বাতিল করার (মোশান চু ডিসমিস) আবেদন করে। পরে বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়ার পর ২০২০ বছরের ২০ মার্চ ফেডারেল আদালত ফিলিপাইনের বিভিন্ন বিবাদী দ্বারা দায়ের করা আবেদন অগ্রাহ্য করে দিয়ে মামলাটি ফেডারেল কোর্টের পরিবর্তে স্টেট কোর্টে পরিচালনার নির্দেশ দেয়।

আরও পড়ুনঃ লঙ্কানদের হারিয়ে বিশ্বকাপে বাংলার বাঘিনীদের দ্বিতীয় জয় 

সেই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ বছরের ২৭ মে বাংলাদেশ ব্যাংক আবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্ট (স্টেট কোর্ট)  আরসিবিসিসহ ফিলিপাইনের ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর ৬ বিবাদী ফেডারেল কোর্টের মতো এই কোর্টেও মামলা বাতিলের আপিল করে। বিবাদীপক্ষের আপিলের বিষয়ে ২০২১ বর্ষের ১৪ জুলাই এবং ১৪ অক্টোবর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

নিউইয়র্ক কাউন্টি সুপ্রিম কোর্ট ২০২২ বছরের ৮ এপ্রিল মামলার আংশিক রায়ে দুটি প্রতিষ্ঠানকে অব্যাহতি দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক আপিল আবেদন করে, যা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে | সর্বশেষ গত ১৩ জানুয়ারি স্টেট কোর্ট আরসিবিসি ও আদার্স বিবাদী আবেদন করেছেন। 

আদালত তার রায়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির ক্ষেত্রে আরসিবিসি'র উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জোগসাজশ ছিলো। আদালতের রায়ে আরো উল্লেখ করা হয়, আরসিবিসি'র নিউইয়র্কের হিসাব ইউজ না হলে এবং ফিলিপাইনে আরসিবিসি অভিযুক্তদের সাহায্য না করলে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক হতে ওই অর্থ অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ ছিলো না।

স্টেট বিচারালয় আরসিবিসি ও অন্যান্য বিবাদীদের আগামী ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জবাব দেওয়ার আদেশ এবং মধ্যস্থতার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নিউইয়র্কে নিয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনি প্রতিষ্ঠান মধ্যস্থতার বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে রিজার্ভ চুরির সর্বাপেক্ষা বৃহৎ এই ঘটনা ঘটেছিল ২০১৬ বর্ষের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে। সেই রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হতে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। পিসি হ্যাকিংয়ের দ্বারা পাচার হওয়া এই অর্থ প্রথমে গিয়েছিল ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের রিজাল ব্যাংকের ৪টি ভুয়া অ্যাকাউন্টে। তারপর  থেকে দ্রুত এই অর্থ উত্তোলন করেন হ্যাকাররা। শেষ পর্যন্ত মার্কিন গোয়েন্দা সংগঠন এফবিআইয়ের সহযোগিতায় মাত্র দেড় কোটি ডলার উদ্ধারে সমর্থ হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। খোয়া যাওয়া অবশিষ্ট অর্থের ফেরত প্রক্রিয়া মামলায় ঝুলে রয়েছে। 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow