ভুবনজয়ী ইতালীয় অভিনেত্রী জিনা লল্লব্রিজিদার চিরবিদায়
ইতালি জয় করে কুড়িয়েছিলেন ইউরোপজুড়ে, দ্যুতি ছড়িয়েছিলেন হলিউডে, ভুবনমোহিনী সেই অভিনেত্রী জিনা লল্লব্রিজিদা আর নেই সোমবার রোমের একটি হাসপাতালে ৯৫ বছর বয়সী এই ইতালিয় অভিনেত্রী মারা গেছেন
ইতালি জয় করে কুড়িয়েছিলেন ইউরোপজুড়ে, দ্যুতি ছড়িয়েছিলেন হলিউডে, ভুবনমোহিনী সেই অভিনেত্রী জিনা লল্লব্রিজিদা আর নেই সোমবার রোমের একটি হাসপাতালে ৯৫ বছর বয়সী এই ইতালিয় অভিনেত্রী মারা গেছেন বলে তার প্রাক্তন আইনজীবী জুলিয়া চিতানি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ পাঠান নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের নতুন নির্দেশ, আনতে হবে যেসব পরিবর্তন
গত শতকের পঞ্চাশ-ষাট দশকের তুমুল জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ইতালির সংস্কৃতিমন্ত্রী জেন্নারো সানজুলিয়ানো বলেছেন, উনি যে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন তার রেশ থাকবে অনন্তকাল পর্যন্ত। জিনা লল্লব্রিজিদার নাতি ফ্রান্সিসকো লল্লব্রিজিদা আজকাল ইতালির কৃষিমন্ত্রী। তিনি দাদির মৃত্যুর বার্তা জানিয়ে টুইটারে লিখেছেন- তিনি ছিলেন ইতালির সিনেমা এবং সংস্কৃতির সবচেয়ে উজ্জ্বল এক তারকা।
বিট দ্য ডেভিল, দ্য হাঞ্চব্যাক অব নটর ডেম, ক্রসড সোর্ডস, কাম সেপ্টেম্বরের মতো সিনেমা কর্তৃক খ্যাতিমান জিনাকে বহুবার ‘বিশ্বের সবচাইতে সুন্দর নারী হিসেবে’ বর্ণনা করা হয়েছে। হামফ্রে বোগার্ট, ফ্রাঙ্ক সিনাত্রা, রক হাডসন, এরল ফ্লাইনের মতো অভিনেতার বিপরীতে কাজ করেছেন এই অভিনেত্রী।
আরও পড়ুনঃ সিনেমার শুটিংয়ে কলকাতায় মিম
বিবিসি লিখেছে, কাসাব্লাংকা খ্যাত হামফ্রে বোগার্টের আখিতে জিনা ছিলেন সিনেমার আরেক মেরিলিন মনরো, শুধু চেহারায় আরেক অভিনেত্রী শার্লি টেম্পলের মতো। ইতালীয় সিনেমায় সিনেমায় সোফিয়া লরেনের সাথেই উচ্চারিত হবে জিনার নাম, যদিও দুজনের পেশাগত ছিল আলোচনার বিষয়বস্তু। ১৯৫০ ও ১৯৬০ এর দশকে জিনা ও লরেন ইতালিয় আবেদনময়ী অভিনেত্রীর প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন।
এক সাক্ষাৎকারে নিজের সম্মন্ধে জিনা বলেছিলেন, “আমি আগুনের গোলা, আমি আগ্নেয়গিরি। আমি যা করেছি, ভীষণ আবেগ নিয়েই করেছি।”ফার্নিচার ব্যবসায়ীর কামরায় ১৯২৭ বছরের ৪ জুলাইয়ে আবির্ভাব নেওয়া জিনার কৈশোর কেটেছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের বোমার আক্রমণ হতে বাঁচার লড়াইয়ে। তাকে ‘লা লল্ল’ নামেই ডাকা হত।
তিনি রোম অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে লেখাপড়া করেন ভাস্কর্য বিষয়ে। ভাস্কর্য এবং ছাপচিত্র নিয়ে পড়ালেখা করা জিনা কম সময়ের ভিতরে মডেলিংয়ে সফলতার মুখ দেখেন। সিনেমায় তাকে প্রথম নোটিশ যায় ১৯৪৬ সালে, ছোটোখাটো চরিত্রে ‘দ্য ব্ল্যাক ইগলে’। কিন্তু সিনেমাতেও সফলতা কুড়াতে বহু সময় লাগেনি তার, পঞ্চাশের দশকের শুরুতেই ইউরোপের বিশাল তারকাদের একজন হয়ে ওঠেন তিনি। কিংবদন্তী এ অভিনেত্রীর ১ম ইংরেজি সিনেমা ‘বিট দ্য ডেভিল’ মুক্তি পায় ১৯৫৩ সালে, যাতে অভিনয় করেন হামফ্রি বোগার্ট ও জেনিফার জোন্সের মতো তারকারা। জিনা অভিনীত সবশেষ উল্লেখযোগ্য সিনেমা ‘কিং, কুইন, নেইভ’ রেহাই পায় ১৯৭২ সালে।
আরও পড়ুনঃ আবারও বলিউডে প্রভাস, দেখা যাবে কোন পরিচালকের ছবিতে?
তিনি কাজ করেছেন ইউনিসেফ এবং জাতিসংঘের সঙ্গে। তবে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য থেকে গিয়ে অসমর্থ হয়েছিলেন। ইতালির সেনেট সদস্য হতেও ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন, অথচ তাতেও বিফলকাম হন। কিউবার প্রবাদপ্রতীম কমিউনিস্ট নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর এক সাক্ষাৎকার নিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন জিনা।
What's Your Reaction?