বারমুডা ট্রায়াঙ্গল

Mar 13, 2023 - 20:42
Mar 13, 2023 - 19:35
 0
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল
সংগ্রহীত ছবি

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এক অপার রহস্যের নাম। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের এই জায়গাটিতে প্রচলিত আছে হাজারও হাড়হিম করা কাহিনী। কথিত আছে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল পার হতে পারে না কোনো জাহাজ কিংবা বিমান। অনেক জাহাজ, বিমান নাকি সেখানে নিখোঁজ হয়েছে! 

আটলান্টিক মহাসাগরের তিন বিন্দু দ্বারা সীমাবদ্ধ ত্রিভূজাকৃতির এই এলাকাকে ডেভিল’স ট্রায়াঙ্গল-ও বলা হয়। যে তিনটি প্রান্ত নিয়ে কাল্পনিক এই ত্রিভূজ তৈরি হয়েছে তার এক প্রান্তে রয়েছে আমেরিকার ফ্লোরিডা, আর এক প্রান্তে পুয়ের্তো রিকো এবং অপর প্রান্তে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ।

সর্বপ্রথম এই জায়গার আবিষ্কার করেন আমেরিকার উদ্ভাবক কলম্বাস। তার বর্ণনামতে, তার জাহাজের নাবিকেরা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল পাড়ি দেবার সময় দেখেছিল আলোর নাচানাচি আর আকাশে ধোঁয়া। এছাড়া কলম্বাস আরো লিখেছেন যে এই জায়গায় এসে তার কম্পাসও ভুল নির্দেশনা দিচ্ছিলো। আজ পর্যন্ত অসংখ্য জাহাজ এবং উড়োজাহাজ মিলিয়ে গেছে এই ট্রায়াঙ্গলে যার কোনো চিহ্ন আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় এ পর্যন্ত ৫০টি বাণিজ্যিক জাহাজ ও ২০ টি বিমান হারিয়ে গেছে এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে। 

১৯৫০ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর সর্বপ্রথম এ বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে খবরের কাগজে লিখেন ই. ভি. ডব্লিউ. জোন্স( E.V.W. Jones)। এর দুই বছর পরেই এই বিষয়ে ফেইট (Fate)ম্যাগাজিনে জর্জ এক্স. স্যান্ড( George X. Sand) "Sea Mystery At Our Back Door" শিরোনামে একটি ছোট প্রবন্ধ লিখেন। এ প্রবন্ধে তিনি ফ্লাইট নাইনটিন ( ইউ এস নেভী-র পাঁচটি ‘টি বি এম অ্যাভেন্জার’ বিমানের একটি দল, যা প্রশিক্ষণ মিশনে গিয়ে নিখোঁজ হয়) এর নিরুদ্দেশের কাহিনী বর্ণনা করেন এবং তিনিই প্রথম এই অপরিচিত ত্রিভুজাকার অঞ্চলের কথা সবার সামনে তুলে ধরেন।

মায়ামি থেকে বিলাসবহুল ২৩ ফুট ইয়টে করে সাগরে পাড়ি জমালেন ক্যাপ্টেন ড্যান বুর‍্যাক আর তার বন্ধুবর ফাদার প্যাট্রিক হরগ্যান। ১৯৬৭ সালের ২২ ডিসেম্বর, কদিন বাদেই ক্রিসমাস। বড়দিনের আলোয় দূর থেকে মায়ামি দর্শনের মোহই আলাদা। তাই উইচক্র্যাফট নামের কেবিন ক্রুজারে চড়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন দুই বন্ধু। কিন্তু তীর থেকে সবে এক মাইল দূরে পৌঁছাতেই কোস্ট গার্ড কল পেলেন যে, জাহাজটি কোনোকিছুর সাথে বাড়ি খেয়েছে, তবে বড় ক্ষতি হয়নি। কোস্ট গার্ড তখনই রওনা হয়ে গেল, ১৯ মিনিটের মাথায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা গেল, কিছুই নেই। কোনো চিহ্নই নেই জাহাজের। বলা হতো, এ জাহাজটি ডুববে না, কিন্তু ডোবা তো পরের কথা, জাহাজটি যে কখনো এসেছিল এখানে, তারই কোনো হদিস পাওয়া গেল না। জাহাজে এত লাইফ জ্যাকেট, লাইফবোট, ফ্লেয়ার, বিপদসংকেত পাঠাবার যন্ত্র- সব থাকা সত্ত্বেও কেউ কিচ্ছুটি জানতে পারলো না। সে জায়গাটি ছিল কুখ্যাত বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের কিনারায়। 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow