কারামুক্ত হয়ে সমাবেশের চেষ্টাও সাবেক কাউন্সিলর রাজীবের

কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছেন বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব।

Jan 23, 2023 - 18:07
 0
কারামুক্ত হয়ে সমাবেশের চেষ্টাও সাবেক কাউন্সিলর রাজীবের
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর :তারেকুজ্জামান রাজীব

সমাবেশে লোক জড়ো করে জানান দিতে চান নিজের অবস্থান। এই জন্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্যের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ করছেন এক সময়ের স্বঘোষিত ‘জনতার কাউন্সিলর’ রাজীব।

শুদ্ধি অভিযানের সময় গ্রেপ্তার রাজীব তিন বছরের বেশি সময় কারা ভোগ করে গেল নভেম্বরে জামিনে মুক্ত হন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে চারটি মামলা। অবৈধ অস্ত্র, মাদক, অর্থপাচার এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাগুলো ঢাকার বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন।

২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে বন্দি ছিলেন রাজীব। তিন বছরের বেশি সময় কারাগারে থেকে গত ১৭ নভেম্বর মুক্তি পান তিনি।

আরও পড়ুনঃ কাশিমপুর কারাগারে আসামি শুক্কুর আলীর ফাঁসি কার্যকর

একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, কারামুক্তি পাওয়ার পর থেকে রাজীব একটি সমাবেশ করার চেষ্টা করছেন। মূলত তিনি ওই সমাবেশের মাধ্যমে রাজনীতিতে স্বক্রিয় হতে চান।

তবে যার কাছে নির্দেশনা চেয়েছেন সেই নেতার কাছ থেকে গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়ায় সমাবেশটি করতে পারছেন না ঢাকা উত্তর সিটির মোহাম্মদপুরের এক সময়ের আলোচিত এই কাউন্সিলর।

রাজীবের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

নিম্নবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামানের তারেকুজ্জামানের নামে দুটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। একটি নামেরা এন্টারপ্রাইজ এবং অপরটি নামেরা বিল্ডার্স।

তারেকুজ্জামান রাজীব তার নামেরা এন্টারপ্রাইজের ব্যাংক হিসাবে কোনো টাকা জমা দিতেন না। পরিচিতদের মাধ্যমে সেই ব্যাংক হিসাবে ১৪ কোটি টাকা জমা করেন।

২০১৫ সালের ১ জুন থেকে ১৫ অক্টোবর ২০১৯ পর্যন্ত চার বছরের ব্যবধানে ওই হিসাবে জমা হয় ২১ কোটি টাকার বেশি। অথচ তার নিজের নামে থাকা দুটি ব্যাংক হিসাবে বিভিন্ন সময় জমা হয় মাত্র ছয় লাখ ২১ হাজার টাকা। আর সেই হিসাবগুলোতে বর্তমানে আছে মাত্র দুই হাজার ৭২৯ টাকা।

২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ছাড়াও জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে রাজীবের বিরুদ্ধে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটিতে রয়েছে তার ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার দাম তিন কোটি টাকা। আছে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধের কাছে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট। রয়েছে তিনটি গাড়ি।

২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ

তারেকুজ্জামান রাজীবের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে হওয়া মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এই মামলায় তিনি ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ থেকে জামিন পান।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশে নেপালের বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তাব বিবেচনা করছে ভারত

মাদক মামলা

বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাত বোতল বিদেশি মদ উদ্ধারের ঘটনায় হওয়ায় মাদক মামলায় র‌্যাব চার্জশিট দেয়।

র‌্যাব-২ এর এসআই (নিরস্ত্র) প্রণয় কুমার প্রামাণিক মামলাটি তদন্ত করে চার্জশিট দেন। এই মামলাটিও বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।

অস্ত্র মামলা

গ্রেপ্তারের সময় র‌্যাব সদর দপ্তরের তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের উপস্থিতিতে রাজীবের দখল ও নিয়ন্ত্রণ থেকে অস্ত্র, গুলি এবং অবৈধ সাত বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করেন। ওই ঘটনায় ভাটারা থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করেন র‌্যাব-১ এর ডিএডি মিজানুর রহমান। ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর অস্ত্র মামলায় আদালতে চার্জশিট দেয় র‌্যাবের এসআই প্রণয় কুমার প্রামাণিক। এই মামলায়ও তার বিচার চলছে।

আরও পড়ুনঃ প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে পরীমনি যে উপহার দিলেন রাজকে

দুদকের মামলা

২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী বাদী হয়ে ২৬ কোটি ১৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি দুদকের উপপরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজীবের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার একটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে অনেক মামলায় বিচার চলছে। তবে কোন মামলার কি অবস্থা খোঁজ না নিয়ে বলতে পারবো না ‘

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow