ইতিবাচক হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার

ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে ২০২২ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় কেটেছে। এর বাহিরে ছিলনা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারও, যেটার কারণে পুরো বছরজুড়েই শেয়ারবাজার ছিল টালমাটাল

Jan 21, 2023 - 11:02
 0
ইতিবাচক হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার
(১৫-১৯ জানুয়ারি) দেশের শেয়ারবাজারকে ইতিবাচক ধারায় ফিরতে দেখা গেছ : সংগ্রহীত ছবি

ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে ২০২২ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় কেটেছে। এর বাহিরে ছিলনা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারও, যেটার কারণে পুরো বছরজুড়েই শেয়ারবাজার ছিল টালমাটাল। তার প্রভাব ২০২৩ সালের ১ম দুই সপ্তাহেও ছিল, তবুও তৃতীয় সপ্তাহ সপ্তাহে (১৫-১৯ জানুয়ারি) দেশের শেয়ারবাজারকে ইতিবাচক ধারায় ফিরতে দেখা গেছে।

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক কোম্পানি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম বলেছিন জানুয়ারি মাসের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াবে শেয়ারবাজার। জানুয়ারি মাসের মধ্যে পুরোপুরি না ঘুরে দাঁড়াতে পারলেও ২০২৩ সালে প্রথম কোয়াটারের ভিতরে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলা হয়ে থাকে প্রার্থনা প্রকাশ করেছেন তিনি।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, মার্কেটপ্লেসে ফান্ড আসতে শুরু করেছে। সরকারের বড় বড় প্রজেক্টগুলোর কাজ সমাপ্ত হয়ে এসেছে। এ প্রজেক্টগুলো হতে এখন আয় আসার সময় হয়েছে। যা অর্থনীতির চাকাকে সচল করে তুলবে। আর অর্থনীতির চাকা সচল হলে শেয়ারবাজারও ঘুড়ে দাঁড়াবে।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বৈশ্বক অর্থনীতি মন্দ হয়েছে। সেই সংঘাত অনেকটাই শেষ হয়ে এসেছে। দুই দেশের যুদ্ধ মীমাংসা হলে বৈশ্বিক অর্থনীতি আবারও ঘুরে দাঁড়াবে। এতে করে বাংলাদেশের অর্থনীতির একসাথে শেয়ারবাজারও ঘুরে দাঁড়াবে বলা হয় মনে করছেন তিনি আশা পাবলিশ করেন।

গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান। সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ডিপোজিটরি ফান্ডকে এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এর ফলে শেয়ারবাজারে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা ইনভেস্টমেন্টের চান্স প্রস্তুত হবে আইসিবির। এছাড়াও ব্যাংকগুলোর এখনও মার্কেটপ্লেসে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।

বিএসইসির চেয়ারম্যানের এইরকম প্রত্যাশা এবং প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ শেয়ারবাজারকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। যেটার কারণে গেলো সপ্তাহজুড়েই ছিল রাষ্ট্রের শেয়ারবাজার উর্ধ্বমূখী। যা সম্মুখে এইরকম বহু ভালো হবে বলে আসা করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।

গেলো সপ্তাহের শেয়ারবাজার পর্যালোচনা:

বিদায়ী সপ্তাহে শেয়ারবাজারে সূচকের সাথে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। বিদায়ী সপ্তাহে দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ শেয়ারবাজার আবরণ স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আদান-প্রদান হয়েছে তিন হাজার ৮৫০ কোটি ৫২ লাখ ১১ হাজার ১১১ টাকার। আর পূর্বের সপ্তাহে লেনদেন মোট লেনদেনের হিসাব ছিল দুই হাজার ১২১ কোটি ৪০ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৯ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে আদান-প্রদান বেড়েছে এক হাজার ৭২৯ কোটি ১১ লাখ ৫৩ হাজার ১৯২ টাকাবা ৮১ শতাংশ।

জানা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫০ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা  দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৬৫ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর ভিতরে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০ পয়েন্ট বা নিঃশেষ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৬৭ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে ও দুই হাজার ২০৮ দশমিক ৬১ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহের ১ম কার্যদিবসে লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল সাত লাখ ৫৪ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৫৬ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে দুই হাজার ১৪৯ কোটি টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৪০০টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১১৪টির, কমেছে ৬৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০৭টির কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে মোট লেনদেনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে সিএসইতে সর্বমোট আদান-প্রদান হয়ে গিয়ে ছিল ৪৭ কোটি ছয় লাখ টাকার। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে আদান-প্রদানে বেড়েছে ৫৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৩ পয়েন্ট বা নিঃশেষ দশমিক ৬৭ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৭৬ পয়েন্টে।

সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩০০টি ইন্সটিটিউট শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯১টির দর বেড়েছে, ৫৪টির কমেছে ও ১৫৫টির ভ্যালু অপরিবর্তিত রয়েছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow