ইন্দোনেশিয়ায় ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহত ১৬২ জন, এখনও আটকা বহু মানুষ।
ভূমিকম্পে আহত ৪৮ বছর বয়সী এক বাসিন্দা ব্যাখা দিচ্ছিলেন এভাবে ‘আমার উপর সবকিছু ভেঙে পড়ে। আমার দুইটি শিশু বেঁচে গেছে, আমি তাদের উদ্ধার করেছি। বাকী ২ জনকে এখানে নিয়ে এসেছি ও একজন এখনও নিখোঁজ।
জাকার্তা, ২২ নভেম্বর – ধ্বংসস্তূপে হন্যে হয়ে ভুক্তভোগী মানুষগুলোকে খুঁজছেন উদ্ধারকর্মীরা। কেউ বা আঘাতগ্রস্থ কাউকে উদ্ধারের পর ছুটছেন হাসপাতালের পথে। অবিরাম সিয়ানজুরে স্বজনদের কান্না আর আহাজারি। সোমবার (২১ নভেম্বর) ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১৬২ জন নিহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। আঘাতগ্রস্থ হয়েছেন আরও অন্তত ৩২৬ জন।
রিখটার স্কেলে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হলেও এর আঘাতে কেঁপে ওঠে জাভা দ্বীপের বেশ কিছু শহর। ভেঙে পড়ে বড় সুবিশাল দালান। ঘটেছে ভূমিধসের ঘটনাও। দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্মকার্তারা জানিয়েছেন, এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। নিহতদের সংখ্যা এইরকম বৃদ্ধিতে পারে বলা হয়ে থাকে আশঙ্কা করছেন তারা।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্যমতে, ভূ-কম্পনটির উৎপত্তিস্থল ছিল সিয়ানজুর এরিয়া থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে ও ভিত্তি ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।
সিয়ানজুর প্রশাসনের মুখপাত্র অ্যাডাম বলেন, কতিপয় হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভূমিকম্পে।
ভুক্তভোগীদের খোঁজে রাতভর চলে উদ্ধার তৎপরতা। সিয়ানজুর হাসপাতালগুলোতে হতাহত লোকজনের স্বজনদের ভিড় বাড়ছে।
ভূমিকম্পে আহত ৪৮ বছর বয়সী এক বাসিন্দা ব্যাখা দিচ্ছিলেন এভাবে ‘আমার উপর সবকিছু ভেঙে পড়ে। আমার দুইটি শিশু বেঁচে গেছে, আমি তাদের উদ্ধার করেছি। বাকী ২ জনকে এখানে নিয়ে এসেছি ও একজন এখনও নিখোঁজ।
মঙ্গলবার সকাল বেলা থেকে উদ্ধার কাজে ভাগ নিয়েছে আরও কয়েকশ পুলিশ সদস্য। আনতারা সংবাদ এজেন্সিকে এই ইনফরমেশন জানিয়েছেন দেশটির ন্যাশনাল পুলিশের মুখপাত্র দেদি প্রসেতিও। উনি এইরকম বলেন, ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করাই এখন তাদের অতুলনীয় কাজ।
পশ্চিম জাভার প্রাদেশিক শাসনকর্তা রিদওয়ান কামিল ভূমিকম্পে ১৬২ জন নিহত হওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেছেন। ভূমিকম্পে নিহতদের মধ্যে শিশুরাও বিদ্যমান বলেও জানিয়ে দেন তিনি। ভূমিকম্পের ফলে আইসোলেটেড হয়ে পড়া লোকজন যেন আরও দুর্ঘটনার মধ্যে না পড়েন সে ব্যাপারে সতর্কও করেন তিনি।
সিয়ানজুর পুলিশ সেরা মেট্রো টেলিভিশনকে জানান, ২০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের অনেকেই আর বেঁচে নেই। এখনও স্থানীয় বাসিন্দারা স্বজনদের নিখোঁজ হওয়ার কথা জানাচ্ছেন।
এদিকে, কোথাও কোথাও বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বিগত রাতে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হয়ে যায় বলা হয় জানা গেছে।
‘প্যাসিফিক রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থানের কারণে ইন্দোনেশিয়া অধিক ভূমিকম্পপ্রবণ ১টি দেশ। এর প্রথমে ২০০৪ সালে দেশটির জবাবে সুমাত্রা দ্বীপের কাছে ৯ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়ে যায় এবং এর ফলে সুনামি ঘা হানে ১৪টি দেশে। ইন্ডিয়া মহাসমূদ্রের উপকূলে ২ লাখ ২৬ হাজার লোক মারা যায় সে সময়। নিহতদের মধ্যে অনেকেই ছিল ইন্দোনেশিয়ার।
What's Your Reaction?