সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয়, নয়াপল্টনে সমাবেশে অনড় বিএনপি
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে ডিএমপি।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপিকে গণসমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নিকট এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে ডিএমপি।
তবে রুহুল কবির রিজভী পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, নয়াপল্টনেই তারা সমাবেশ করতে চান। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নয়। তারা নয়াপল্টনের সমাবেশের বিষয়ে অনড়।
এদিকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নয়াপল্টনে দলের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। এই ব্যাপারে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য অনুমতি চাইনি। নয়াপল্টনের জন্য চেয়েছিলাম। ইদানিং ডিএমপির পক্ষ থেকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিএনপির মিডিয়া শক্তিস্তরের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, নয়াপল্টনে সমাবেশের প্রিপারেশন রয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা সমাবেশ করতে প্রয়োজন না।
এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশের যে অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি, তাতে ব্যাপী দেওয়া হয়েছে ২৬ শর্ত। যাতে হয়েছে, মিছিল নিয়ে সমিতিতে যাওয়া যাবে না। মিটিং করা যাবে দুপুর ১২টা হতে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
শর্তগুলো হলো
১. এই অনুমতিপত্র ঠাঁই ব্যবহারের সম্মতি নয়, জায়গা ব্যবহারের জন্য নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ হতে অ্যাপ্রুভ নিতে হবে।
২. জায়গা ব্যবহারের অনুমতিপত্রের উল্লেখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
৩. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৫. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বীয় ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের ভেতরে এবং বাইরে পুষ্ট রেজুলেশনের সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
৬. নিজ ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশ গেটে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে ও সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের দ্বারা চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভিউকল স্ক্যানারের দ্বারা সমাবেশস্থলে আসা সকল যানবাহন তল্লাশির আয়োজন করতে হবে।
৮. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৯. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে ও আশপাশে মাইক ব্যবহার করা যাবে না।
১০. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।
১১. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও মানুষ সমবেত হওয়া যাবে না।
১২. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক ব্যবহার করা যাবে না।
১৩. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর ঘা আসতে পারে এরূপ কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বলার যোগ্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
১৪. অনুমতি দেওয়া সময়ের ভিতরে সমাবেশের কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
১৫. সমিতি শুরুর দুই ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।
১৬. সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থায় সমবেত হওয়াসহ যান এবং লোক চলাচলে প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না।
১৭. পতাকা, ব্যানার এবং ফেস্টুনের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠি-রড ইউজ করা যাবে না।
১৮. আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জননিরাপত্তা বাধাগ্রস্ত হয় এরূপ কোনো কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৯. রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ ও দেওয়া যাবে না।
২০. উসকানিমূলক প্রদান বা বিজ্ঞপ্তি বিলি করা যাবে না।
২১. মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না।
২২. নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে, মূল সড়কে কোনো পার্কিং করা যাবে না।
২৩. সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা অবস্থা পতন হলে উদ্যোগী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।
২৪. স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সভা করতে হবে।
২৫. উল্লেখিত শর্তাবলি পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির নির্দেশ বাদ বলে গণ্য হবে।
২৬. জনস্বার্থে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়া এ অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।
What's Your Reaction?
