পুতিনের হামলায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন কিয়েভে , ভারী তুষারপাতের আশঙ্কা ।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ভারী তুষারপাত হবে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। এই সময় সেখানকার দিন ও রাতের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের তলে নেমে যাচ্ছে। কারণ, সেখানে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ এবং তাপের ব্যবস্থা নেই ।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ভারী তুষারপাত হবে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। এই সময় সেখানকার দিন ও রাতের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের তলে নেমে যাচ্ছে। কারণ, সেখানে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ এবং তাপের ব্যবস্থা নেই। যাতে করে বিদ্যুৎ এবং তাপের অনটনে তারা রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে বাধ্য হয়। রোববার (২৭ নভেম্বর) কিয়েভ শহরে তুষারপাত হয়েছে। এখানে যুদ্ধের প্রথমে ২৮ লাখ লোক বাস করত। সম্প্রতি ভয়াবহ যুদ্ধের কারণে অগণিত বেসামরিক নাগরিক ওই শহর ত্যাগ করে পালিয়েছে। এখন অনুমান করা হচ্ছে যে এই শহরের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে থাকবে।
গ্রিড অপারেটর ইউক্রেনারগো শনিবার বলেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা সারাদেশে বিধিনিষেধ এবং ব্ল্যাকআউটের ভিতরে প্রয়োজনীয় চাহিদার মাত্র তিন-চতুর্থাংশ বরাদ্দ করতে সক্ষম হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের ২৭টি অঞ্চলের ভিতরে ১৪ টিতে ও কিয়েভের প্রতিটি অঞ্চলে প্রায় ১ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ ব্যবহারের উপর বিধিনিষেধ রয়েছে।’ জেলেনস্কি রাতের ভিডিওবার্তায় বলেন, ‘সন্ধ্যায় কারেন্ট ব্যবহার বাড়লে বিভ্রাটের ঘটনা বাড়তে পারে।’ তিনি এইরকম বলেন, ‘এটি আবারও প্রমাণিত যে বিদ্যুৎ সংরক্ষণ করা এবং যুক্তিসঙ্গতভাবে ব্যবহার করা সম্প্রতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। রয়টার্স ইয়াসনো কিয়েভে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। ইয়াসিনোর চিফ অপারেটিং কর্মকর্তা সের্গেই কোভালেঙ্কো বলেন, ‘শহরের পরিস্থিতির অগ্রগতি হয়েছে কিন্তু এখনও বেশ কঠিন পরিস্থিতি রয়ে গেছে। তিনি কিয়েভে প্রতিদিন অন্তুত চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রত্যাশা জ্ঞাপন করেন।’ কোভালেঙ্কো তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, আপনার যদি বিগত দিন অন্তত চার ঘণ্টা তড়িৎ না থাকে তাহলে ডিটেক কিয়েভ ইলেকট্রিক নেটওয়ার্কে লিখুন। আমার সহকর্মীরা আপনার সমস্যাটি সমাধান করার চেষ্টা করবে। ইয়াসনো ডিটেক এর ১টি শাখা। এটি ইউক্রেনের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ বেসরকারি তড়িৎ সরবরাহকারী। বুধবার রাশিয়ার মিসাইল হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো এখনও শুরু করতে পারেনি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা। ফলে সরবরাহে ব্যাপক ঘাটতি নোটিশ দিয়েছে। ঠাণ্ডা বাড়ার সাথে সঙ্গে তা আরও প্রকট হয়ে ওঠার আশঙ্কায় রয়েছেন কিয়েভ শাসকরা। এই অবস্থায় ব্ল্যাকআউট দিয়ে বিদ্যুৎ সংরক্ষণ ব্যতীত উপায় দেখছে না কর্তৃপক্ষ। ইউক্রেনারগো বলেন, ‘ঘাটতির কারণে ব্যবহারে বিধিনিষেধ এখনও বহাল রয়েছে। এটি সম্প্রতি প্রায় ২০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।’
এ ব্যাপারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার সর্বশেষ বোমা হামলার পর শুক্রবার সারাদেশে ৬০ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে যে রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে জয়লাভ করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে ইউক্রেনকে ঠাণ্ডায় জমিয়ে নতি করাতে চায়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন এই মাসের শুরুতে বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট [ভ্লাদিমির] পুতিন মনে হয় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তিনি যদি জোর করে ইউক্রেন কর্তৃত্ব করতে না পারেন, কিন্তু উনি দেশটিকে ঠাণ্ডায় জমিয়ে দেবেন। গত সপ্তাহে ইউক্রেনের রাষ্ট্র-পরিচালিত পারমাণবিক শক্তি কোম্পানি ইনার্গোএটম বলেছিল, দেশজুড়ে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানছে। অতঃপর তিনটি ইউক্রেনীয় পারমাণবিক কারেন্ট কেন্দ্রের পাওয়ার ইউনিট অফ করে দেওয়া হয়েছিল ।
What's Your Reaction?