বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপের পরিকল্পনায় ইইউ

ইউরোপে আশ্রয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশের বিরুদ্ধে ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

Jan 26, 2023 - 16:25
 0
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপের পরিকল্পনায় ইইউ
ইউরোপীয় ইউনিয়ন

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) বৈঠকে বসছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রীরা।

বৈঠকে ইউরোপে আশ্রয়ের অধিকার নেই এমন লোকজনকে আরও বেশি সংখ্যায় নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর উপায়ের পাশাপাশি এই প্রক্রিয়ায় সহায়তা না করা দেশগুলোর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তের বিষয়েও আলোচনা হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি কোনো দেশের বিরুদ্ধে ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপ করে, তাহলে সেই দেশের নাগরিকরা ওই ব্লকে প্রবেশের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা পান না, এমনকি ভিসা পাওয়ার জন্য দীর্ঘসময়ের অপেক্ষার মুখোমুখিও হওয়া লাগতে পারে।

জানা যায়, যেসব দেশ নিজ নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার কাজে সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হয়, প্রায় তিন বছর আগে সেসব দেশের জন্য ভিসা সীমিত করার পদক্ষেপে ঐক্যমতে পৌঁছায় ২৭ জাতিরাষ্ট্রের এই জোট।

তবে ওই সিদ্ধান্তের পর কেবল আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে শাস্তি দেওয়া হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাহী সংস্থা ইউরোপীয় কমিশন ইরাক, সেনেগাল এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও গাম্বিয়ার মতো একই ধরনের শাস্তির প্রস্তাব করেছে।

তবে ইইউর দু’জন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘প্রত্যাবাসন নিয়ে ঢাকার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে।’

ইইউর পরিসংখ্যানবিষয়ক সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে অবৈধ আশ্রয়প্রার্থী ফেরতের হার ২১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানোর এই হার ইইউর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে অগ্রহণযোগ্য হবে বলে মনে করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা।

বৃস্পতিবারের বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের তত্ত্বাবধানের কাজ কীভাবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যায় তা নিয়ে তাদের তিক্ত দ্বন্দ্ব পুনরুজ্জীবিত করার চেয়ে বরং প্রত্যাবর্তন বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রথমেই অনিয়মিত অভিবাসন হ্রাস করার বিষয়ে আলোচনা করবে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মন্ত্রীদের আলোচনার বিষয়ে একটি নথি তৈরি করেছে ইউরোপীয় কমিশন। ওই নথিতে বলা হয়েছে, অবৈধ আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠাতে কার্যকর এবং সাধারণ একটি ব্যবস্থাপনা দাঁড় করানোই হবে বিশ্বাসযোগ্য অভিবাসন ও আশ্রয় ব্যবস্থার কেন্দ্রীয় স্তম্ভ।

একের পর এক যুদ্ধ, দারিদ্র্য আর নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পালিয়ে বাঁচতে প্রত্যেক বছর মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার লাখ লাখ মানুষ ইউরোপে যাওয়ার প্রধান পথ হিসেবে ব্যবহার করে ভূমধ্যসাগরকে।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে কেবল ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে ঢুকেছে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ। এছাড়া আরও প্রায় ৮০ লাখ ইউক্রেনীয় শরণার্থী ইউরোপজুড়ে আশ্রয় নিয়েছে।

অভিবাসন এবং আরও অধিকসংখ্যক আশ্রয়প্রার্থীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশের নেতাদের বৈঠকের দুই সপ্তাহ আগে বৃহস্পতিবার ইইউর অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রীদের ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ জাপানে মালবাহী জাহাজ ডুবে নিখোঁজ ১৮

নেতাদের যৌথ বিবৃতির খসড়ায় বলা হয়েছে, ইইউর সমস্ত প্রাসঙ্গিক নীতিমালা মেনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের নিজ নিজ দেশে কার্যকর প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। ইউরোপীয় কমিশন বলেছে, আশ্রয়প্রার্থীদের নিজ দেশের অপর্যাপ্ত সহযোগিতা এক্ষেত্রে অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জ। তাদের নাম-পরিচয় শনাক্ত, ভ্রমণের নথিও সমস্যা তৈরি করছে।

এদিকে অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য সদস্যরা মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার অনিয়মিত মুসলিম অভিবাসনের বিরুদ্ধে জোরেশোরে প্রতিবাদ করছে।

তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী অবস্থান নিয়েছে জার্মানি। দেশটি ব্লকের বাইরের কর্মীদের জন্য তাদের চাকরির বাজার উন্মুক্ত করতে চাইছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow