রাষ্ট্র কাঠামো ‘মেরামতে’ বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখা

রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেছে বিএনপি। বিএনপির দিক থেকে অনির্বাচিত কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার বিপরীতে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা

Dec 19, 2022 - 19:01
 0
রাষ্ট্র কাঠামো ‘মেরামতে’ বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখা
বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর হোটেল দ্য ওয়েস্টিনে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। :সংগ্রহীত ছবি

রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেছে বিএনপি। বিএনপির দিক থেকে অনির্বাচিত কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার বিপরীতে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ঘোষিত ১৯ দফা ও বেগম খালেদা জিয়া ঘোষিত বিএনপির ভিশন-২০৩০ এর আলোকে এই রূপরেখাটি প্রস্তুত করা হয়েছে।

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর হোটেল দ্য ওয়েস্টিনে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

 

আরও পড়ুনঃ বিকল্পধারার মহাসচিবসহ আবদুল মান্নানসহ : ১২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা


দফাগুলো হলো-

১. গত এক দশকের অধিককালব্যাপী আওয়ামী লীগ  ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার তুচ্ছ উদ্দেশে অনেক অযৌক্তিক মৌলিক সাংবিধানিক সংশোধনী আনয়ন করেছে। একটি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ আকৃতি করে  বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক সাংবিধানিক সংশোধনী এবং পরিবর্তনগুলো পর্যালোচনা করে এসব রহিত/সংশোধন করা হবে এবং আদার্স অত্যাবশ্যকীয় সাংবিধানিক সংস্কার করা হবে। সংবিধানে গণভোট ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করে জনগণের গণতান্ত্রিক কর্তৃত্ব পুনঃস্থাপন করা হবে।


২. প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে সব মত এবং পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ১টি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন এবং সম্প্রীতিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। তাই অব্যাহত আলোচনা, মতবিনিময় ও পারস্পারিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎমুখী এক নতুন ধারার সামাজিক চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে। এজন্য ১টি ‘জাতীয় সমঝোতা কমিশন’ গঠন করা হবে।

৩. বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ও স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে স্থায়ী সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে ১টি ‘নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে।

৪. অর্থবিল, আস্থা ভোট, দেশীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন এবং সংবিধান সংশোধনী বিল ছাড়া অন্যসব ব্যাপারে সংসদ মেম্বারদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা শিওর করে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হবে।

৫. প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ও রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনয়ন করা হবে। দেশীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ এবং বিচার বিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সুসমন্বয় করা হবে।

৬. রয়েছে সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের সমন্বয়ে দেশ পরিচালনার লক্ষ্যে দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী এবং প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ‘দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা’ প্রবর্তন করা হবে।

৭. রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ও বিশিষ্টজনের অভিমতের ভিত্তিতে স্বাধীন, দক্ষ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য এবং দৃঢ়চিত্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ১টি কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন করার লক্ষ্যে আধুনিক ‘নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন’ সংস্কার করা হবে। ইভিএম নয়,  কেন্দ্রে পেপার-ব্যালটের দ্বারা ভোট প্রদান নিশ্চিত করা হবে। আরপিও, ডেলিমিটেশন অর্ডার ও রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন সংস্কার করা হবে। স্থানীয় রাষ্ট্রশাসক গোষ্ঠী ইলেকশনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল করা হবে।

৮. সংকীর্ণ রাজনৈতিক দলীয়করণের উপরে উঠে সব রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে এ  প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন করা হবে। শুনানির দ্বারা সংসদীয় কমিটির ভেটিং সাপেক্ষে এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়া হবে।

৯. বাংলাদেশের সংবিধান এবং মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। বর্তমান বিচারব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একটি ‘জুডিশিয়াল কমিশন’ গঠন করা হবে। জুডিশিয়াল সার্ভিসে পেজ ২ নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ, বদলি, পদোন্নতি, অবসর মঞ্জুরিসহ জবের শৃঙ্খলাবিধান সুপ্রিমকোর্ট কর্তৃক চালিত হবে। বিচারবিভাগের জন্য সুপ্রিমকোর্টের নিয়ন্ত্রণাধীন ১টি পৃথক সচিবালয় থাকবে। সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের অভিশংসন প্রশ্নে সংবিধানে কথিত ইতোপূর্বেকার ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ অ্যারেঞ্জমেন্ট পুনঃস্থাপন করা হবে। এজন্য সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনয়ন করা হবে। দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে কেবলমাত্র জ্ঞান, প্রজ্ঞা, নীতিবোধ, বিচারবোধ ও সুনামের কঠোর মানদণ্ডে যাচাই করে বিচারক নিয়োগ করা হবে। প্রিয় কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানের ৯৫(গ) অনুযায়ী নির্দিষ্ট যোগ্যতা ও মানদণ্ড সম্বলিত ‘বিচারপতি নিয়োগ আইন’ প্রণয়ন করা হবে।

১০. দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ পরিষেবা, জনপ্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে যোগ্য এবং প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি ‘প্রশাসনিক সংশোধন কমিশন’ গঠন করে প্রশাসন পুনর্গঠন করা হবে। মেধা, সততা, সৃজনশীলতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং প্রশিক্ষণ বেসামরিক এবং সামরিক প্রশাসনে নিয়োগ, বদলি এবং পদোন্নতিতে যোগ্যতার একমাত্র মাপকাঠি হিসেবে মীমাংসা করা হবে।

১১. প্রিয় কোর্টের একজন প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে সার্বিক সংস্কারের লক্ষ্যে একটি ‘মিডিয়া কমিশন’ গঠন করা হবে। সৎ সাংবাদিকতার পরিবেশ পুনরুদ্ধার করা হবে এবং চাঞ্চল্যকর সাগর-রুনি হত্যাসহ সকল সাংবাদিক উপদ্রব এবং হত্যার বিচার নিশ্চিত করা হবে।

১২. দুর্নীতির ক্ষেত্রে কোনো আপোষ করা হবে না। বিগত দেড় দশকব্যাপী সংগঠিত অর্থ-পাচার এবং দুর্নীতির খোজ করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা ও শ্বেতপত্রে চিহ্নিত দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা  করা হবে। রাষ্ট্রের বাইরে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক এবং আইনানুগ ব্যবস্থা ধারণ করা হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন ও দুর্নীতি নিবারণ আইন সংস্কারের পাশাপাশি পদ্ধতিগত সংস্কারের দ্বারা স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। সংবিধান অনুযায়ী ‘ন্যায়পাল’ নিয়োগ করা হবে।

১৩. সর্বস্তরে বিধানের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ ও মানুষের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং অমানবিক নিষ্ঠুর শারীরিক এবং মানসিক নিপীড়নের সমাপন ঘটানো হবে। ‘সর্বজনীন মানবাধিকার চার্টার’ অনুযায়ী মানবাধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে মানবাধিকার কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হবে।  দেড় দশক যাবৎ সংগঠিত সকল বিচারবহির্ভূত হত্যা, ক্রসফায়ারের নামে নির্বিচারে হত্যা, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্মম শারীরিক নির্যাতন, নিষ্ঠুর এবং অমানবিক অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত সব ব্যক্তির সুবিচার নিশ্চিত করা হবে।

১৪. অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদ, অভিজ্ঞ ব্যাংকার, কর্পোরেট নেতা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তির সমন্বয়ে ১টি ‘অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন’ গড়ন করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র সাম্য ও সোশাল ন্যায়বিচারের নিরিখে প্রবৃদ্ধির সুফল সুষম বণ্টনের দ্বারা ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূরীকরণ করা হবে। উপরোক্ত সাংবিধানিক পাল্টানো কমিশন, প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন, জুডিশিয়াল কমিশন, মিডিয়া কমিশন ও অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশনগুলো সুনির্দিষ্ট সময়ের ভিতরে স্ব-স্ব প্রতিবেদন পেশ করবে যেন সংশ্লিষ্ট সুপারিশগুলো ফাস্ট বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।

১৫. ‘ধর্ম যাহার যার, দেশ সবার’ এই মূলনীতির ভিত্তিতে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী নিজ নিজ আইন পালনের পূরণ কর্তৃত্ব ভোগ করবেন। দলমত ও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাহাড়ি এবং সমতলের ক্ষুদ্র-বৃহৎ সব জাতিগোষ্ঠীর সংবিধান প্রদত্ত সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্ম-কর্মের অধিকার, নাগরিক দখল এবং জীবন, সম্ভ্রম এবং সম্পদের পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান করা হবে।

১৬. শ্রমজীবী লোক ও চা-বাগান, বস্তি, চরাঞ্চল, হাওর-বাওর ও মঙ্গাপীড়িত ও উপকূলীয় অঞ্চলের বৈষম্য দূরীকরণ ও সুষম উন্নয়নে বিশেষ কর্মসূচি স্বীকার ও বাস্তবায়ন করা হবে। কর্মচারীদের ন্যায্য মজুরি শিওর করা হবে। শিশুশ্রম বন্ধ করা হবে।

১৭. সকল কালাকানুন বাদ করা হবে এবং অপ্রয়োজনীয় কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো হতে বিদ্যুৎ ক্রয় বন্ধ করা হবে। আমদানি নির্ভরতা পরিহার করে নবায়নযোগ্য ও মিশ্র এনার্জি-নির্ভর তড়িৎ উৎপাদন এবং উপেক্ষিত গ্যাস/খনিজ  আহরণ/আবিষ্কারে উপযুক্ত আয়োজন নেওয়া হবে।

১৮. বিদেশি সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ভূখণ্ডের মধ্যে কোনোরকম সন্ত্রাসবাদী তৎপরতাকে বরদাশত করা হবে না ও কোনো সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা আশ্রয়-প্রশ্রয় পাবে না। ভিন্নমতের বিরোধী শক্তি নিবারণে সন্ত্রাসবাদকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ইউজ করা ও সন্ত্রাসবাদের তকমা লাগিয়ে বিরোধী টিম দমনের অপতৎপরতা অফ করা হবে।

১৯. রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সুসংগঠিত, যুগোপযোগী ও সর্বোচ্চ দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত করে গড়ে তোলা হবে। স্বকীয় গুরুত্ব বহাল রেখে প্রতিরক্ষাবাহিনীকে  বিতর্কের উপরে রাখা হবে।

২০. ক্ষমতার ব্যাপক বিকেন্দ্রীকরণের টার্গেটে স্থানীয় রাষ্ট্রশাসক বিভাগ প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিকতর স্বাধীন, শক্তিশালী এবং ক্ষমতাবান করা হবে। এসব প্রতিষ্ঠানকে এমনভাবে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে যেন তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ নানারকম পরিষেবা প্রদান ও উন্নয়ন কার্যক্রমে কার্যকর অবদান রাখতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন এবং আরেক কোনো জনপ্রতিনিধির খবরদারি মুক্ত স্বাধীন স্থানীয়  নিশ্চিত করা হবে এবং স্থানীয় রাষ্ট্রশাসক বিভাগ প্রতিষ্ঠানে সরকারি প্রশাসক নিয়োগ বন্ধ করা হবে। কোর্ট দিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় গর্ভনমেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নির্বাহী আদেশবলে বহিষ্কার/অপসারণ করা হবে না।

২১. রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিবিড় জরিপের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের একটি তালিকা প্রণয়ন করা হবে এবং তাদের যথাযথ মর্যাদা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। এই তালিকার ভিত্তিতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কল্যাণার্থে বিধান প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করা হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের লিস্ট যাচাই বাছাই করে ১টি নির্ভুল তালিকা প্রস্তুত করা হবে।

২২. যুবসমাজের ভিশন ও চিন্তা-চেতনাকে গ্রহণ করে আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব-উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। বেকার যুবকদের যথাযথ কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত পক্ষান্তরে নূন্যতম এক বছর পর্যন্ত (যা প্রথমে ঘটে) বেকার ভাতা প্রদান করা হবে। যুব-দক্ষতা বৃদ্ধি করে ‘ডিমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’ আদায়ের টার্গেটে দৃশ্যমান স্টেপ  করা হবে এবং বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে নানামুখী বাস্তবসম্মত কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। শরীর এবং পুষ্টির ওপর সর্বাধিক  দ্বারা মানবসম্পদ উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ ধারণ করা হবে।

২৩. নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার টার্গেটে নির্দিষ্ট কর্মসূচি ধারণ করা হবে। জাতীয় সংসদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নারীদের  প্রদান এবং স্থানীয় সরকার আয়োজনে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

২৪. বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান নৈরাজ্য দূর করে নিম্ন ও মধ্য পর্যায়ে চাহিদা কেন্দ্রিক শিক্ষা এবং শীর্ষ শিক্ষার ক্ষেত্রে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা-ক্যারিকুলামকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। রিসার্চে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ টাকা-পয়সা বরাদ্দ করা হবে।

২৫. ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই নীতির ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করার নিমিত্তে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রবর্তন করা হবে। জাতীয় বাজেটে দেহ খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হবে।

২৬. পরপর দুই টার্মের এক্সট্রা কেউ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।

২৭. কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হবে। স্বার্থে ভর্তুকি কর্তৃক হলেও শস্য বিমা, পশু বিমা, মৎস্য বিমা ও পোল্ট্রি বিমা শুরু করা হবে। কৃষি জমির অকৃষি ব্যবহার অফ করা হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ভূমির উদ্দীন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের মেম্বার জয়নুল আবদিন ফারুক, আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মাহবুবে রহমান শামীম, বিলকিস জাহান শিরিন, শ্যামা ওবায়েদ, অনিন্দ্র ইসলাম অমিত, আসাদুজ্জামান, জহির উদ্দিন স্বপন, শাম্মী আখতার, বিএনপি মিডিয়া শায়রুল কবির খান, খালেদা জিয়ার প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।

এ ছাড়া গণফোরামে সভাপতি মোস্তফা মোহসিন মন্টু, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া, গণসংহতি আন্দোলনের উত্তম সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, দেশ সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, ২০ দলীয় জোটের জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পাটির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, এনপিপির ফরিদুজামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজর রহমান ইরান, জাতীয় টিমের সৈয়দ এহসানুল হুদা, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা কামরুল খান, জাগপার ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, জাগপার অপর অংশের খন্দকার লুৎফর রহমান, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপের শাওন সাদেকী প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

পেশাজীবীদের মধ্যে অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তাজমেরি এস এ ইসলাম, অধ্যাপক একেএম আজিজুল ইসলাম, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, সাংবাদিক সোহরাব হোসেন, কামাল উদ্দিন সবুজ, আবদুল হাই শিকদার, আবদাল আহমেদ, কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow