ভালোবাসার বন্দনায় এসেছে বাসন্তী ছোঁয়া

বসন্তের দ্বিতীয় দিনে ফাগুনের আগুন রঙ নিয়ে হাজির ভালোবাসার দিন। আজ বিশ্বজুড়ে উদ্‌যাপিত হচ্ছে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ বা ‘ভালোবাসা দিবস’। প্রেমিক-প্রেমিকা, বন্ধু-বান্ধব, স্বামী-স্ত্রী, মা-সন্তান, ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন বন্ধনে আবদ্ধ মানুষেরা এই দিনে একে অন্যকে তাদের ভালোবাসা জানায়।

Feb 14, 2023 - 14:04
 0
ভালোবাসার বন্দনায় এসেছে বাসন্তী ছোঁয়া
ছবি: সংগৃহীত

বসন্তের আগমনে কোকিল গাইছে গান। ভ্রমরও করছে খেলা। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। আজ পহেলা ফাল্গুন। ফাল্গুনের হাত ধরেই বসন্তের আগমন। প্রকৃতিকে স্বাগত জানাতেই শীতের খোলস থেকে বের হয়ে এসছে রক্তবর্ণ পলাশ, শিমুল আর কৃষ্ণচূড়া। আর রক্তবর্ণ ফুলগুলি মনে করিয়ে দেয় এটাই রক্তঝরা ভাষার মাস। ভাষার মাসে ভালোবাসাকে সঙ্গে নিয়ে ধরায় হাজির হয়েছে বসন্ত।

তাইতো কবি সুফিয়া কামালের আকুতি হে কবি নীরব কেন ফাগুন যে এসেছে ধরায়/ বসন্তে বরিয়া তুমি লবে না কি তব বন্দনায়। নির্মলেন্দু গুণের লেখায় ফুটে উঠেছে নতুনের আগম- পাতাঝরা দিন ভালোবাসার ডাক দিয়ে যায়। মনের অজান্তে ভেতর থেকে ভেসে আসে।

করোনাভাইরাস মহামারীতে গেল বছর প্রায় উৎসবের রঙ ফিকে হয়েছে। প্রিয়জন হারানোর মর্মন্তুদ আর্তনাদ শুনেছে আকাশ। জরা-ব্যাধি, শোক-তাপে জর্জরিত মন্দ সময়কে পেছনে ফেলে নগরবাসীর কামনা- ঋতুরাজের হাত ধরে এবার আসুক নতুন দিন।

তাই নিসর্গে ঋতুরাজের রঙিন শাসনের অভিষেকে ঢাকাবাসীর আয়োজনেও কমতি নেই। নৃত‌্যে, বাদ‌্যে, ছন্দে-গীতে বসন্ত বরণের সব আয়োজন চূড়ান্ত।

এ বসন্ত শুধু শুধু উচ্ছ্বাসের রং ছড়ায় না, আমাদের ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে শহীদদের রক্তরঙিন স্মৃতির কথাও মনে করিয়ে দেয়। ১৯৫২ সালের ৮ ফাল্গুন বা একুশের পলাশরাঙা দিনের সঙ্গে তারুণ্যের সাহসী উচ্ছ্বাস আর বাঁধভাঙা আবেগের জোয়ারও যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে।

তবে বরাবরের মতো এবার ফাগুনে নেই অমর একুশে গ্রন্থমেলা। করোনা মহামারিতে থমকে আছে প্রাণের সেই বই মেলা।

প্রাচীন আমল থেকেই বাঙালি বসন্ত উৎসব পালন করে আসছে। হিন্দুদের পৌরাণিক উপাখ্যান ও লোককথাগুলোতে এই উৎসবের উল্লেখ পাওয়া যায়। হিন্দু বৈষ্ণবরা এটি বেশ আয়োজনের সঙ্গে পালন করে থাকেন।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে বিশেষ নৃত্যগীতের মাধ্যমে বসন্ত উৎসব পালনের রীতি চলে আসছে। বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রথম ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করার রীতি চালু হয়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘আহা আজি এ বসন্তে/ কত ফুল ফোটে/ কত বাঁশি বাজে/ কত পাখি গায়...।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow