বিএনপি অফিসে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস’ চালানো হয়েছে : গণতন্ত্র মঞ্চ
নয়াপল্টনে গত ৭ ডিসেম্বর পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যে হামলা ও লুটপাট করা হয়েছে সেটিকে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস’ বলে অভিহিত করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতারা। তাদের দাবি, আওয়ামী লীগ যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করেছে, তা ভয়াবহ। তারা মানুষকে উসকানি দিয়ে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেভাবে হামলা, লুটপাট এবং তছনছ করা হয়েছে সেটিকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বলে অভিহিত করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতারা।
সোমবার দুপুরবেলা নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিভ্রমণ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তারা এই কথা বলেন।
তারা বলেন, আওয়ামী যেভাবে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করেছে তা ভয়াবহ। মানুষকে উস্কানি দিয়ে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের ডগা নেতা জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিস্বাস, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণতন্ত্র মঞ্চের হাসিব উদ্দিন, জাতীয় কাউন্সিলের ডা: ফয়জুল হাকিম লালা, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, জাসদের শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর প্রমুখ নেতারা বিএনপির ক্ষতিগ্রস্ত কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেন। তারা প্রত্যেকটি ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন শেষে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা অবিলম্বে খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসসহ আটক সকল নেতাকর্মীর মুক্তি এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের দ্বারা সরকারের পতন অনিবার্য। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল বন্দি নেতাকর্মীদের অবিলম্বে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য হবে।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা বহু ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। তারা শান্তিপূর্ণভাবে গণসমাবেশ সম্পন্ন করেছে। এই জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ যা করেছে তা নজিরবিহীন। জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, এটি কোনো সভ্য দেশে চাওয়া যায়? এ ধরনের ঘটনার বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে উল্লেখ করে উনি বলেন, একটানা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক বলেন, বিএনপির অফিসে যারা হামলা ও তছনছ করেছে তাদেরকে অবিলম্বে নিয়মের আওতায় আনতে হবে। দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিএনপির প্রত্যেক নেতাকর্মীর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান দু:খ প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে বলেন, একারণে না হলে গণজাগরণের মধ্য দিয়েই আপনাদের বিদায় হবে।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘আমরা সংহতি জানাতে এসেছি। যা দেখলাম ৭১ এর তাণ্ডবলীলাকে চিন্তা করিয়ে দেয়। এ সরকারের অধোগতি ছাড়া দেশের মানুষের মুক্তি আসবে না। খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসসহ সকল বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি করেন তিনি।
গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেভাবে হামলা চালিয়ে লণ্ডভণ্ড করা হয়েছে সেটা একেবারেই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। তারা জিয়ার ম্যুরাল ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করছে তা ভয়াবহ। তারা দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। সরকারের পায়ের তলায় মাটি নাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদেরকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সংসদে রয়েছেন তাদেরকেও পদত্যাগ করার নিমন্ত্রণ জানায়। এই সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ ঘটাতে হবে। তা না হলে সবার উপর আঘাত আসবে’।
এ সময় বিএনপির নেতাদের ভিতরে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান খান শিমুল, আ ক ম মোজাম্মেল হক, মৎস্যজীবী দলের মো: আব্দুর রহিম প্রমুখ।
What's Your Reaction?