সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে আইএমএফ

২০৪১ বছরের ভিতরে উন্নত-সমৃদ্ধ, শীর্ষ আয়ের বাংলাদেশ গড়তে সাহায্য অব্যাহত রাখার আস্থা দিয়েছে আন্তর্জাতিক কারেন্সি তহবিল (আইএমএফ)। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা জানান বাংলাদেশে সফররত আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ। পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

আরও পড়ুনঃ বিএনপি অসুস্থ হয়ে গেছে, চিকিৎসা দরকার: কাদের

আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ২০৪১ সালের ভিতরে বাংলাদেশ ১টি উন্নত-সমৃদ্ধ এবং শ্রেষ্ঠ আয়ের দেশে পরিণত থেকে চায়। এ পাওয়ার ইচ্ছা পূরণে আইএমএফ সমর্থন অব্যাহত রাখবে। অ্যান্তইনেত মনসিও বলেন, বাংলাদেশের সাথে আইএমএফের দীর্ঘদিনের অংশীদারত্ব রয়েছে। আইএমএফ এই অংশীদারত্বকে যত্নসহকারে লালন করে। আমি সে অংশীদারত্বকে আরও শক্তিশালী করার জন্য এখানে এসেছি। আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির ভয়ানক প্রভাব, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কঠিন পরিস্থিতির কারণে পুরো জগৎ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মতো উদীয়মান অর্থনীতিগুলো নানারকম বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে; বিশেষ করে মুদ্রাস্ফীতির চাপ, নিত্যপণের দর বৃদ্ধি এবং বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সমস্যা।

আরও পড়ুনঃ ৪.৫ বিলিয়ন ডলারের বাংলাদেশের ঋণের প্রস্তাব আইএমএফের বোর্ডে উঠছে ৩০ জানুয়ারি

এসব সমস্যা মোকাবিলায় আইএমএফ বাংলাদেশের প্রচেষ্টার পাশে থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন অ্যান্তইনেত মনসিও। করোনা মহামারির প্রভাব এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত ও নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাষ্ট্রের অগ্রগতির গতি কিছুটা কম হয়েছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ইফেক্ট থেকে বাঁচাতে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সহাযতা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশও সমস্যায় পড়েছে। সরকার নিম্ন আয়ের মানুষের সহায়তার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ও খাবার সাহায্য কর্মসূচি প্রসারণ করেছে।

আরও পড়ুনঃ স্বামীর মতোই বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেলেন পাইলট অঞ্জু

শেখ হাসিনা বলেন, দুর্দশা বিমোচন এবং আহার নিরাপত্তা অর্জনকে টার্গেট করে গভর্নমেন্ট উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।প্রধানমন্ত্রী জানান, খাবার উৎপাদন বাড়াতে সকল অনাবাদী ভূমি চাষের আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো দুঃখ পাচ্ছে, এমনকি প্রচুর উন্নত দেশেও। অগ্রিম ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশ আইএমএফের নিকট সহায়তা চেয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বেলআউটের জন্য নয় বরং একটি আগাম ব্যবস্থা হিসেবে আইএমএফের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক। উনি বলেন, গত এক দশক বাংলাদেশ ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাক্ষাৎকালে নারীর ক্ষমতায়ন, মানবী শিক্ষা, কমিউনিটি ক্লিনিক ও আইসিটি ক্যাম্প ব্যাপারে আলোচনা হয়। এ সময় অন্যান্যের ভিতরে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের  আব্দুর রউফ তালুকদার, সিনিয়র অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও আইএমএফ-এর ঢাকার আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দে।

সাক্ষাতকালে আইএমএফ প্রতিনিধি ১৯৭২ সালের ১৭ আগস্ট বাংলাদেশ যখন আইএমএফের সদস্যপদ লাভ করে তখনকার দুটো ছবি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।