মানহীন শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিত বেকার বাড়ছে: রাষ্ট্রপতি

মানহীন শিক্ষায় দেশে উচ্চ শিক্ষিত বেকার বাড়ছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রির নামে সার্টিফিকেট বিতরণ করছে, গুদাম থেকে মাল বের করার মতো গ্রাজুয়েট তৈরির কারখানা খুলে বসেছে।

Jan 31, 2023 - 20:35
 0
মানহীন শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিত বেকার বাড়ছে: রাষ্ট্রপতি
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের প্রথম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন : সংগ্রহীত ছবি

মানহীন শিক্ষায় দেশে উচ্চ শিক্ষিত বেকার বাড়ছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রির নামে সার্টিফিকেট বিতরণ করছে, গুদাম থেকে মাল বের করার মতো গ্রাজুয়েট তৈরির কারখানা খুলে বসেছে।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের প্রথম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি

  • রাষ্ট্রপতি বলেন, যারা ব্যবসায় করতে চান বাংলাদেশে অনেক সম্ভাবনার খাত রয়েছে, সেখানে গিয়ে ব্যবসায় করতে পারেন। কিন্তু শিক্ষাকে নিয়ে ব্যবসায় করার মনমানসিকতা পরিহার করাই সবার জন্য মঙ্গল।

তিনি বলেন, পত্র-পত্রিকা খুললেই দেখা যায় কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রির নামে সার্টিফিকেট বিতরণ করে যাচ্ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট তৈরির কারখানা খুলে বসেছে। অনেকটা গুদাম থেকে মাল বের করার মতো। প্রথমে আসবে, প্রথমে বের হবে।

আবদুল হামিদ বলেন, শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিখল বা কর্মসংস্থানের জন্য কতটুকু যোগ্যতা অর্জন করল তার কোনো বালাই নাই। ফলে উচ্চ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
২০১০ সালেও এই হার ছিল মাত্র ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। কয়েক বছরে বেকারত্বে হার প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায়, এটা উচ্চশিক্ষিতদের জন্য বড় দুঃখজনক। যদি এসএসসি বা এইচএসসি পাস শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বে হার বেশি থাকতো বা বৃদ্ধি পেত তাহলে বলা হতো যে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কম তাই চাকরি পাচ্ছে না

বেকারত্ব

  • কর্মসংস্থানের হ্রাস বেকারত্বে জন্য আরেক বিপদ। যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের রয়েছে পর্যাপ্ত অভাব। ‘অভাগা যে দিকে যায় সাগর শুকিয়ে যায়’ অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি অপর একটি জাতীয় দৈনিকে “জোটভুক্ত ক্রেতা সংগঠন ‘অ্যাকর্ড’-এর শর্তারোপ টঙ্গীতে একরে পর এক বন্ধ পোশাক কারখানা” শিরোনামে একাটা খবর প্রকাশ হয়। ইতোমধ্যে জোটভুক্ত ক্রেতা সংগঠন অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশের বেঁধে দেয়া শর্ত পূরণ না করতে পেরে টঙ্গীতে ৩০টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। চাকরি হারিয়ে লাখো শ্রমিক দিশেহারা। এমনভাবে কর্মসংস্থান বন্ধ হওয়া মানে ‘মহা বেকারত্ব বৃদ্ধির পদধ্বনি’ ঠিক এই শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় গত ২২ জানুয়ারি অন্য একটি দৈনিক পত্রিকার ১ম পৃষ্ঠায়। বিদ্যুৎ খরচ বৃদ্ধি ১৫ শতাংশ, গ্যাস খরচ ১০ শতাংশ বৃদ্ধি, পরিবহন খরচ বেড়েছে ৩০ শতাংশ এবং গত দুই বছরে শ্রমিক খরচ ৩২ শতাংশ বেড়েছে। সব মিলিয়ে ১৭ দশমিক ১১ শতাংশ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে বিনিয়োগকারীদের। তাই বিনিয়োগ গুছিয়ে নিচ্ছে তারা। শত প্রতিকূল পরিবেশের কারণে কমে যাচ্ছে কর্মসংস্থান। যখন কর্মসংস্থান থাকবে না বেকার তো হতেই হবে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে চরম অবহেলা সরকারি-বেসরকারি দু’ভাবেই রয়েছে। সরকার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আন্তরিক হলেও কর্মে আছে যথেষ্ট আন্তরিকতার অভাব। ফলে উচ্চশিক্ষিত বেকারত্ব কমাতে পারেছে না বরং উল্টো বেড়ে চলছে।
  • তিনি আরও বলেন, উচ্চ চিন্তা ও সহজ জীবনাচরণ তোমাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। সদাচরণ আর সদালাপ হচ্ছে শিক্ষা জীবনের ভূষণ। তোমরা সমাজের সকল অন্ধকার দূর করে আলোর পথে এগিয়ে যাও। তোমাদের নতুন জীবন হোক আলোকময়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, শিক্ষা উপমন্ত্রী জনাব মহিবুল হাসান চৌধুরী, সমাবর্তন বক্তা নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মি. কৈলাশ সত্যার্থী, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিস সারাফাত,  উপাচার্য প্রফেসর ড. এইচএম জহিরুল হক, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেখ মামুন খালেদ ও উপদেষ্টা প্রফেসর ড. রিদওয়ানুল হক।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow