দুর্নীতি নয়, মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি: প্রধানমন্ত্রী

Jan 1, 2023 - 16:20
 0
দুর্নীতি নয়, মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি: প্রধানমন্ত্রী

দুর্নীতি নয়, মানুষের ভাগ্য গড়তে দেশে ফিরে এসেছি বলা হয় মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতি করার জন্য আসিনি, রাষ্ট্রের মানুষের নিয়তি গড়তে এসেছি। বাবা-মা-পরিবার হারিয়ে এদেশে দুর্নীতি করতে ফিরে আসিনি। সব হারিয়ে দেশের মানুষের কপালের পরিবর্তন করার জন্য এসেছি। ২১ বছর পর ক্ষমতায় প্রবল বৃষ্টিপাত পর আমাদের রাষ্ট্রের একটি নীতিমালা ছিল ব্যবসাবান্ধব নিয়ম স্বীকার করা, সেটাই করেছি।


রোববার (১ জানুয়ারি) পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) ইন্টারন্যাশনাল বাণিজ্যমেলা-২০২৩ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

এখনকার ডিপ্লোম্যাসি (কূটনীতি) পলিটিক্যাল ডিপ্লোম্যাসি না, ইকোনমিক ডিপ্লোম্যাসি হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব দূতাবাসকে রপ্তানি বাণিজ্য, কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা বেশি, আমরা কী রপ্তানি করার জন্য পারি বা কোথা থেকে আমরা ইনভেস্টমেন্ট আনতে পারি, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার নিদের্শ দিয়েছি।


তিনি বলেন, আমি নানারকম টাইমে বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়েছি, ওই এলাকার বাংলাদেশের যারা রাষ্ট্রদূত তাদের ডেকে সেভাবে ব্রিফ করেছি। আবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সেটি বলা হয়ে থাকে দেওয়া আছে। দূতাবাস চেষ্টা করবে, কোন কান্ট্রিতে কোন পণ্যের চাহিদা আছে। আমরা সেটাই রপ্তানি করতে ট্রাই করবো। এভাবেই বাণিজ্য বৃদ্ধি করবো।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা রপ্তানিযোগ্য কিছু পণ্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। সেটাকে বহুমুখী করার কথা, আমি বার বার এ কথা বলে যাচ্ছি। এখনও বলছি, যত বেশি পণ্য বহুমুখী করতে পারবো, যত বহু নিউ নতুন বাজার পাবো, তত বেশি পণ্য রপ্তানি করতে পারবো। আমাদের মানুষের কর্মক্ষমতাও যেন বাড়ে সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।

বাণিজ্যমেলা উদ্বোধন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পূর্বাচলে দ্বিতীয়বারের মতো বাণিজ্যমেলা আরম্ভ হলো। প্রথমবার যখন এখানে বাণিজ্যমেলা হয়, করোনার বিধিনিষেধের কারণে আসতে পারিনি। ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেছিলাম। তবে ডিজাইন থেকে চালু করে সবকিছুতেই আমি ছিলাম। একারণে এইখানে প্রবল বৃষ্টিপাত উৎসাহ বেশি।


তিনি বলেন, করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অনেক রাষ্ট্রের অর্থনীতি হিমশিম খাচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এইরকম বলার যোগ্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী  দস্তগীর গাজী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, এফবিবিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন। স্বাগত বলার যোগ্য রাখেন রপ্তানি অগ্রগতি ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এ এইচ এম আহসান।

এবারের মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, হংকং, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, নেপালসহ ১২টি দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। মেলায় ১৭টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। মেলায় দেশ-বিদেশের মোট ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। গেল বার এ পরিমান ছিল ২২৫টি।


প্রতিদিন সকাল ১০টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে বাণিজ্যমেলা। তবে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে। এবারের মেলার প্রবেশ প্রাইস স্বীকৃত বয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। অনলাইনে ৫০ শতাংশ ডিসকাউন্টে মেলার টিকেট খরিদ যাবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যৌথ উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো এই মেলা বসছে পূর্বাচলে। এর প্রথমে ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এ মেলা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে সংঘটিত হয়। কোভিড মহামারির কারণে এক বছর (২০২১ সালে) মেলা হয়নি।

২০২২ সালে প্রথমবারের মতো পূর্বাচলের এই স্থায়ী এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্যমেলা আয়োজন করা হয়। একটু দূরে হলেও মেলায় অংশগ্রহণকারী ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে বিপুল বিশেষ প্রবৃত্তি তৈরি হয়েছে।


মেলায় যাতায়াত সুবিধার জন্য গতবারের মতো এবারো শাটল বাস সার্ভিস রয়েছে। কুড়িল বিশ্বরোড হতে এক্সিবিশন সেন্টার পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে ৭০টি বিআরটিসি বাস চলাচল করবে। স্বার্থে এর সংখ্যা এইরকম বাড়ানো হবে। বাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ টাকা। মেলা চলাকালীন এসব বাস চলাচল করবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow