"ঢাবি "জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে সরস্বতী পূজা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে সরস্বতী পূজা উদযাপন, ভক্ত-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে সরস্বতী পূজা উদযাপন, ভক্ত-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণ।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি)
- সকাল ৯টায় জগন্নাথ হল মন্দিরে শ্বেতশুভ্র বসনা জ্ঞানদায়িনী দেবী সরস্বতীর পূজাঅর্চনার মধ্য দিয়ে এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর ১০টায় ভক্তরা পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে প্রণাম জানায় বিদ্যার দেবী সরস্বতীকে। সন্ধ্যা ৬টায় আরতির পর পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। মেয়েদের পাঁচটি হলেও উদযাপন হচ্ছে সরস্বতী পূজা।
এ সময় ভক্তকুলের উলু ধ্বনি, আর ঢাকির ঢোলে মুখরিত ছিল পূজা মণ্ডপ, শিশুদের দেওয়া হয় হাতেখড়ি, ভক্তদের মাঝে বিতরণ করা হয় প্রসাদ। পূজার সাজে সজ্জিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হল। করোনাকালের এ আয়োজন গত কয়েক বছরগুলোর তুলনায় কিছুটা ম্লান। তবু এক বছর পর সীমিত পরিসরে হলেও পূজা উদযাপন করতে পারায় ভক্তরা খুশি। জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থী গণেশ রায় বলেন, ‘প্রতি বছর বর্ণাঢ্য আয়োজনে আর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পূজাটি উদযাপন করি। কিন্তু করোনার বিধিনিষেধের কারণে সীমিত পরিসরে করতে হচ্ছে। তারপরও খুশি সশরীরে করতে পেরে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই সুস্থ-সুন্দর পৃথিবী ফিরে পাবো, মায়ের কাছে সেই প্রার্থনা জানাই।'
বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, দেবীর সামনে হাতেখড়ি দিয়ে শিশুরা বিদ্যা চর্চার সূচনা করছেন। ভক্তরা দেবীর চরণে অঞ্জলি দিয়ে আরতি করছেন। নিজেদের জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য নানা উপায়ে আরাধনা করছেন বিভিন্ন মণ্ডপে । এছাড়া অনেককে দেখা যায়, সর্বতীর্থ পরিক্রমা মন্দিরে পরিক্রমণ, দু হাত উত্তোলন করে দেবীর সামনে মাথা আনত করে প্রার্থনা করতে।
জগন্নাথ
- হলের পুকুরে স্থাপন করা হয়েছে চারুকলার তৈরি সবচেয়ে বড় বিদ্যাদেবীর প্রতিমা।
জর্জ অরওয়েলের ‘নাইনটিন এইটটি ফোর’ বইয়ের থিমের আলোকে মণ্ডপ তৈরি করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুনঃ অনলাইন জুয়ার শাস্তি ২ বছরের জেল, ডিসি সম্মেলনে প্রস্তাব
এ বিভাগের শিক্ষার্থী প্রান্ত দত্ত বলেন, “আমাদের পূজামণ্ডপ জর্জ অরওয়েলের ‘মিনিস্ট্রি অব ট্রুথের’ আদলে সাজানো। কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠী সংবাদ, সংগীত, কলা ইত্যাদিকে ব্যাবহার করে মিডিয়ার দ্বারা কীভাবে তার জণগণের কাছে তাদের প্রপাগান্ডা প্রচার করে, তার প্রতিভূ এই ‘মিনিস্ট্রি অব ট্রুথ’।
“বিদ্যাদেবী তাদের এই করাল প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করুক, সাধারণ মানুষকে জ্ঞান দান করুক, যাতে তারা তাদের বিদ্যাবুদ্ধি দিয়ে শাসকগোষ্ঠীর হীনচালের শিকার হয়ে না পড়ে, এই বার্তাকে সামনে রেখেই আমাদের এই আয়োজন।”
সরস্বতী পূজায় বিভিন্ন ধর্মের শিক্ষার্থীদের মিলন মেলার মাধ্যমে ‘অসাম্প্রদায়িক চেতনা’ চর্চা হয় বলে মনে করেন জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাজল দাস।
তিনি বলেন,
- “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অসাম্প্রদায়িক চর্চার বাতিঘর। সরস্বতী পূজা আমাদের হিন্দু ধর্মের শিক্ষার্থীদের পূজা হলেও এখানে ক্যাম্পাসের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা ঘটে এবং সেখোনে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।… আমরা বার্তা দিতে চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একতাবদ্ধ, সব সময় আসাম্প্রদায়িক চেতনা চর্চা করে এবং মানুষের সম্প্রীতি চর্চার আহ্বান করে।”
আরও পড়ুনঃ বরিশালে সাবেক ইউপি মেম্বারের বাড়ি থেকে ২ নারীর মরদেহ উদ্ধার
অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বলেন, “উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে সবাই পূজার প্রস্তুতিতে কাজ করছেন। নিরাপত্তার বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রক্টরিয়াল টিম কাজ করবে। আশা করছি সকলের সহোযোগিতায় আমরা সুন্দর একটি পূজা পালন করতে পারব।”
What's Your Reaction?