‘আমি একা নই আমরা সবাই সেরা’ ম্যাচ জিতিয়ে বললেন : ক্যাসেমিরো
ক্যাসেমিরোকে ব্রাজিল শিবিরে ‘দ্য ট্যাঙ্ক’ বলে ডাকা হয়...
গ্যালারিতে সেই সময় ব্রাজিলের সোনার প্রজন্মের এক একজন তারকা বসে। রবার্তো কার্লোস, রোনাল্ডো, কাফু, কাকা। বিশ্বজয়ী ব্রাজিলের (Brazil) এক একজন দুর্লভ রত্ন সব। তবুও ব্রাজিল-সুইজারল্যান্ড ম্যাচ তখনও গোল শূন্য।
ব্রাজিল কোচ তিতেকে ডাগআউটে কিছুটা চিন্তিত দেখাচ্ছে। তাহলে কি এক পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে হবে? সঠিক তখনই বক্সের মধ্যে থেকে গোলার মতো শট ক্যাসেমিরোর (Casemiro)। আর বল সোজা জালে। ব্যস, গ্যালারি জুড়ে মুহূর্তে চালু হয়ে গেল হলুদ-ঝড়! তার মাঝে রবার্তো কার্লোসের মুখটা ভেসে উঠল। অসম্ভব তৃপ্ত দেখাচ্ছিল তাঁকে। একটা সময় এরকম শটে অধিক গোল করেছেন ব্রাজিল জার্সি গায়ে। গ্যালারিতে বসে সেরকম একটা গোল দেখে তৃপ্ত যে হবেন, সেটাই স্বাভাবিক।
ক্যাসেমিরোকে ব্রাজিল শিবিরে ‘দ্য ট্যাঙ্ক’ বলে ডেকে আনা হয়। সেই ট্যাঙ্কের বিধ্বংসী গোলে কেবলমাত্র তিন পয়েন্ট এল না, একইসঙ্গে নকআউট নিশ্চিত হয়ে গেল ব্রাজিলের। ম্যাচ শেষের পরই নেইমারের বার্তা চলে এল। যেখানে নেইমার বলে দিলেন, ‘‘এই মুহূর্তে পৃথিবীর সেরা মিডফিল্ডার ক্যাসেমিরো।’’ পরে রাতের দিকে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে নেইমারের কথায় পূরণ সমর্থন জানিয়ে গেলেন কোচ তিতেও। ব্রাজিল কোচ বলা হয়ে থাকে গেলেন, ‘‘নেইমার ভুল তো কতিপয় বলছে না। আমিও বলব এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা মিডফিল্ডার ক্যাসেমিরোই।’’
কিন্তু যাঁকে নিয়ে এত চর্চা সেই ক্যাসেমিরোর অদ্ভুতরকমের শান্ত শোনাল। বাড়তি কোনও আহ্লাদ নেই। নিজের থেকেও তাঁর মুখে বহু টিম। নিজে এদিন ম্যাচের সর্বসেরা হয়েছেন। তবে তিনি নিজে কোনওরকম কৃতিত্ব নিতে নারাজ। বলছিলেন, ‘‘আমি ম্যাচের সেরা হয়েছি ঠিকই। কিন্তু এই পুরস্কার দলের সবার পাওয়া উচিত। সবাইকে সেরাটা দিতে পেরেছে বলেই আমরা জিততে পেরেছি। কারও একার ভাল খেলার জন্য টিম জেতেনি।’’
২০১৪ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে সেমিফাইনালে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। চার বছর প্রথমে রাশিয়া বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে হার। এবার অবশ্য শুরু থেকেই চ্যাম্পিয়নের মতোই দেখাচ্ছে তিতের টিমকে। বলাবলি চালু হয়ে গিয়েছে, ট্রফির অন্যতম দাবিদার ব্রাজিলই। প্রথম দুটো ম্যাচে টিম যেরকম ভাবে খেলেছে, তাতে প্রত্যাশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এদিন প্রেস কনফারেন্স সেটি নিয়ে প্রশ্নও করা হল ব্রাজিলের ‘ট্যাঙ্ককে’। জিজ্ঞেস করা হয়, গত বিশ্বকাপের টিমের সাথে এ দলটার কোথায় পার্থক্য দেখছেন? ক্যাসেমিরো পরিষ্কার করে বলা হয় গেলেন, এবারের দল অনেক বেশি ব্যালান্সড।
দলে পর্যাপ্ত বহু ম্যাচ উইনার। বলছিলেন, ‘‘আপনি যদি দেখেন, তাহলে আমাদের এবারের দলটা অনেক অধিক শক্তিশালী। দলে প্রচুর বিকল্প রয়েছে। প্রচুর ম্যাচ উইনার। স্কোয়াডে যারা আছে তাদের বেশিরভাগ সবাই জ্যেষ্ঠ ক্লাবে খেলে। আর নিজেদের ক্লাবে প্রত্যেকেই তা সত্ত্বেও সেরা।’’
ভুল কিছু বলেননি ক্যাসেমিরো। ভিনিসিয়াস, রদ্রিগো, রাফিনহা, অ্যান্টনি, গ্যাব্রিয়েল জেসুস– এঁরা প্রত্যেকে পৃথিবীর নামী সমুদয় ক্লাবে খেলেন। কেউ রিয়াল মাদ্রিদ, কেউ বার্সেলোনা, কেউ ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। কাসেমিরো–তিনিও সম্প্রতি রিয়াল হতে ইউনাইটেডে গিয়েছেন। এই দিন এইজন্য বলছিলেন, ‘‘আমাদের টিমে সবাই শোনে কাকে কী করতে হবে।
একারণে ম্যাচ বার করতে সমস্যা হচ্ছে না। প্লাস, আমাদের ডিফেন্সও দারুণ। আমাদের গোলকিপার রিচার্লিসনকে কিছু করতেই হয়নি এখনও পর্যন্ত। কারণ আমাদের ডিফেন্স চালু হয়ে যায় রিচার্লিসনের পা থেকে! শুনতে বিস্মিত লাগবে। তবুও আমাদের ফার্স্ট লাইন অব ডিফেন্স অথচ রিচার্লিসনই।
What's Your Reaction?
