হার্ট অ্যাটাক হলে সময় নষ্ট না করে যা করতে হবে

বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ হলো হার্ট অ্যাটাক। সাধারণত ৪০ বছর বয়সের পর থেকে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে। তবে ১৮ বছর বয়সেও অনেকের হার্ট অ্যাটাক হওয়ার নজির রয়েছে। 

Feb 21, 2023 - 17:09
 0
হার্ট অ্যাটাক হলে সময় নষ্ট না করে যা করতে হবে
সংগ্রহীত ছবি

বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ হলো হার্ট অ্যাটাক। সাধারণত ৪০ বছর বয়সের পর থেকে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে। তবে ১৮ বছর বয়সেও অনেকের হার্ট অ্যাটাক হওয়ার নজির রয়েছে। 

সাধারণত মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকে বেশি থাকে। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাইপার লিপিডেমিয়া থাকলে, বংশে কার হার্ট অ্যটাক হলে, ধূমপান, মদ্যপানের অভ্যাস, স্থূলতা বা মুটিয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত মানসিক চাপ হার্ট অ্যাটাকের বড় কারণ।  

কারও হার্ট অ্যাটাক হলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া গেলে অনেক ক্ষেত্রে বিপদ এড়ানো সম্ভব হবে। 

হার্ট অ্যাটাকের কারণে কেউ আচমকা পড়ে গেলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি সিপিআর (CPR) দিতে হবে। হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের কথা ভেবে বিদেশে শক দেওয়ার যন্ত্র রাস্তার ধারে লাগানো থাকে। কিন্তু এ দেশে সেই ব্যবস্থা নেই। তাই হার্ট সচল রাখতে

সিপিআর দেওয়াই প্রাথমিক উপায়।

  • রোগীর মুখে অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ দিতে হবে। সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। তবে এই ওষুধ রক্তচাপ কমিয়ে দেয়। তাই এটি দিলে রোগীকে শুইয়ে রাখতে হবে।।
  • রোগীকে বসিয়ে পিঠে বালিশ দিয়ে হেলান দিয়ে থাকতে হবে । তবে যে পজিশনে থাকতে রোগীর সুবিধা হচ্ছে, তেমন অবস্থাতেই রাখা ভাল। এই সময় সিঁড়ি ভাঙা, হাঁটাচলা করানো ঠিক নয়।

______________________________________________________________

আরও পড়ুনঃ  গ্রিড লাইনে বিপর্যয়: বিদ্যুৎহীন ছিল রাজধানীর বড় অংশ
______________________________________________________________

যেভাবে সিপিআর প্রয়োগ করবেন 


সবার উচিৎ সিপিআর সম্পর্কে ধারণা রাখা। আগে থেকে জানা থাকলে যে কেউ-ই সিপিআর প্রয়োগ করতে পারবেন। অল্প সময়ের মধ্যে কারও জীবন বাঁচাতে সাহায্য করতে পারবেন। প্রথমেই কেউ অজ্ঞান হয়ে গেলে চিৎকার দিয়ে অন্য কারো সাহায্য চাইতে হবে। দু’জন হলে সহজে কাজগুলো করা যাবে।

১. প্রথমেই আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশের অবস্থা দেখে নিতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশে কিছু থাকলে তা সরিয়ে নিতে হবে।

২. এরপর দেখতে হবে আক্রান্ত ব্যক্তির জ্ঞান আছে কি না। জ্ঞান থাকলে তাকে স্বাভাবিকভাবে চিৎ করে শুইয়ে দিতে হবে। যাতে তিনি ধীরস্থিরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারেন। 

৩. জ্ঞান না থাকলে তার শ্বাস নেওয়ার পথ যেমন- নাক, মুখ ও গলার ভেতরের অংশ পরিষ্কার আছে কি না দেখতে হবে। তার মাথা পেছনের দিকে টেনে, চিবুক ওপরের দিকে তুলে শ্বাসনালি খুলে দিতে হবে। যদি কফ-রক্ত বা অন্য কোনো কিছু এপথে আটকে থাকে, তবে তা সরিয়ে শ্বাস নেয়ার পথ করে দিতে হবে এবং সিপিআর প্রয়োগ শুরু করতে হবে।

৪. ব্যক্তির বুক বরাবর বসে এক হাতের তালুকে বুকের মাঝ বরাবর ও একটু বামদিকে স্থাপন করতে হবে। তার ওপর অপর হাত স্থাপন করে ওপরের হাতের আঙুল দিয়ে নিচের হাত আঁকড়ে ধরতে হবে। হাতের কনুই ভাঁজ না করে সোজাভাবে বুকের ওপর চাপ দিতে হবে।

৫. এমন গতিতে চাপ প্রয়োগ করতে হবে যেন প্রতি মিনিটে ১০০-১২০টি চাপ প্রয়োগ করা যায়। এভাবে প্রতি ৩০টি চাপ প্রয়োগের পর আক্রান্তের মুখে মুখ রেখে দু’বার ফুঁ দিতে হবে। এটাকে বলে রেসকিউ ব্রেথ। এমনভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে যেন বুকের পাঁজর ২ থেকে ২.৫ ইঞ্চি নিচে নামে। যাতে চাপ হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ পড়ে।

৬. হাসপাতালে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত বা জ্ঞান ফিরে আসা অথবা স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস চালু হওয়া পর্যন্ত একইভাবে সিপিআর চালিয়ে যেতে হবে।

৭. জ্ঞান ফিরলে বা শ্বাস-প্রশ্বাস চালু হলে তাকে একপাশে কাত করে শুইয়ে দিতে হবে। এর পর হাসপাতালে নিয়ে পরবর্তী চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow