টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে মরক্কোর ইতিহাস

ম্যাচের নির্ধারিত সময় গোল শূন্য। অতিরিক্ত সময়েও মেলেনি গোলের দেখা। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকার ভাগ্যে সমাপ্ত হাসি হাসল মরোক্কো

Dec 7, 2022 - 01:24
 0
টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে মরক্কোর ইতিহাস
সংগ্রহীত ছবি

ম্যাচের নির্ধারিত সময় গোল শূন্য। অতিরিক্ত সময়েও মেলেনি গোলের দেখা। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকার ভাগ্যে সমাপ্ত হাসি হাসল মরোক্কো। স্পেনকে হারিয়ে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের কোয়ার্টারে কদম রাখল মরোক্কো।

নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠল মরক্কো। এর পূর্বে একবারই বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে খেলেছিল মরক্কো। 

গোলশূন্য ১২০ মিনিট খেলা শেষে টাইব্রেকারে স্পেনকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলো আফ্রিকান সিংহরা। পেনাল্টি শুটআউটে মরক্কোর গোলরক্ষক বৌনর দুর্দান্ত দক্ষতায় ৩টি শট নিয়ে একটিতে গোল করতে পারেনি স্পেন। ১৯৮৬ আসরে শেষ ষোলোয় জার্মানির বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরেছিল উত্তর আফ্রিকার দেশটি। 

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) কাতার বিশ্বকাপে শেষ ষোলোতে  সম্মুখীন হয় স্পেন এবং মরোক্কো। এডুকেশনাল সিটি স্টেডিয়ামে ম্যাচটির নির্ধারিত সময়ে গোল  থাকে স্পেন এবং মরোক্কো। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ৩-০ ব্যবধানে জয় পেয়ে পরের ধাপে যায় মরোক্কো। আর বিদায় গ্রহণ করে স্প্যানিশরা পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে পরিস্কার জনপ্রিয়  স্পেন। সেই সঙ্গে ফর্মের তুঙ্গে ছিল স্প্যানিশরা। অথচ কাতার বিশ্বকাপ আরম্ভ থেকে দেখেছে নানা অঘটন। একারণে মরোক্কোও যে ছেড়ে দেওয়ার মতো নয় সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচে তেমন ফুটবলই উপহার দিয়েছে মরোক্কো। পুরো ম্যাচে জাল অখণ্ড রেখে নির্ধারিত সময় শেষ করে মরোক্কো। অতিরিক্ত সময়েও গোল হতে দেয়নি। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে গিয়ে সাফল্য পায় মরোক্কো।

এদিন ম্যাচের শুরু হতে দুদল রক্ষণ নির্ভর খেলা পুরস্কার দেয়। খেলায় অনেক একটা আক্রমণ ধরা পড়েনি। প্রথমার্ধের বেশিরভাগ সময় লড়াই হয়েছে মাঝমাঠ কেন্দ্রিক।নির্ধারিত সময়ে বল দখলে এগিয়ে ছিল স্পেন। ৭৬ ভাগ সময় বল নিজেদের পায়ে রাখে স্পেন। এ সময়ে আক্রমণ করে ১০ বার। যার মধ্যে ১টি অনটার্গেটে যাওয়ার মতো। বিপরীতে ২৪ ভাগ সময় বল দখলে রেখে মরোক্কো আক্রমণে যায় ৬বার। যেটার মধ্যে দুইটি ছিল লক্ষ্যে যাওয়ার মতো। 

মরোক্কো আক্রমণ করে ম্যাচের ১২তম মিনিটে। প্রতিপক্ষের ডি বক্সের সামান্য সামনে হতে ফ্রি কিক পায় মরোক্কো। কিক নেন আশরাফ হাকিমি। অথচ তার নেওয়া কিক ওপর দিয়ে চলে যায়। ৩৩ মিনিটে আরেকটি সুযোগ মিস হয় মরোক্কোর। মাজরাউই বক্সের বাইরে হতে জোরালো শট নিয়েছিলেন। কিন্তু তার নেওয়া শট সরাসরি স্পেনের গোলরক্ষক ইউনাই সিমনের কাছে চলে যায়। বিরতির আগে বাকি সময় চেষ্টা করেও গোলের লক্ষ্য পায়নি দুদল। শেষ দিকে আক্রমণে ধার বাড়িয়েও স্কোরবোর্ডে নাম লেখাতে পারেনি স্পেন ও মরোক্কো। বিরতি হতে ফিরেও একই গতিতে এগুলো স্পেন-মরোক্কোর লড়াই। বিরতি হতে ফিরে অ্যাসেনসিও ফ্রি-কিক থেকে ওলমোকে পাস দেন। ওলমোর শট লক্ষ অনুযায়ী মতোই করেন । কিন্তু লাভ হলো না।

তবে ম্যাচের একদম শেষ মিনিটে পিএসজির স্টার পাবলো সারাবিয়ার শট গোলবারে লেগে বাইরে চলে গেলে হতাশ হয়ে যান স্পেন শিবির। দ্বিতীয়ার্ধেও স্পেন সেভাবে আক্রমণে ধার দেখাতে পারেনি। উল্টো স্পেনের ম্যাচে গতি দেখায় মরোক্কো। যদিও লাভের লাভ কিছুই হয়নি। গোলহীন থেকেই নির্ধারিত টাইম শেষ করতে হয় মরোক্কো এবং স্পেনকে। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ না হলে টাইব্রেকারে গিয়ে ফল মেলে। পুরো ম্যাচে যুদ্ধ করেও শেষ পর্যন্ত নিরাশায় ডোবে স্প্যানিশরা। ফলে গোলশূন্য অবস্থাতেই শেষ হয়ে যায় ১২০ মিনিটের খেলা। ফলে ম্যাচের ফলাফল পেনাল্টি শুটআউটে নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেন রেফারি।

যেখানে ১ম তিনটি শট থেকেই গোল করতে ব্যর্থ হন স্পেনের তিন খেলোয়াড় পাবলো সারাবিয়া, কার্লস সোলার ও বুসকেতস। অন্যদিকে মরক্কো প্রথম দুইটি শটে গোল দিলেও ৩য় শটটি মিস করে তারা। তবুও ৪র্থ শটে গোল করে টিমের জয় নিশ্চিত করেন মরক্কোর অধিনায়ক আশরাফ হাকিমি।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow