সিংড়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে ১৫ জন গুলিবিদ্ধ আটক ৯

পূর্ব দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তারকে ভিত্তি করে নাটোরের সিংড়ায় দুই পক্ষের ভিতরে গোলাগুলি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে।

Dec 3, 2022 - 17:02
 0
সিংড়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে  ১৫ জন গুলিবিদ্ধ আটক ৯
সিংড়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে

 পূর্ব দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তারকে ভিত্তি করে নাটোরের সিংড়ায় দুই পক্ষের ভিতরে গোলাগুলি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (০৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় থানার বেড়াবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ।  আহতদের সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।   

আহতরা হলেন- ওই গ্রামের মৃত ওসমান আলীর ছেলে আ. মান্নান হাজী (৫৫), সেহাব উদ্দিনের ছেলে আমিনুল ইসলাম তালুকদার (৭০), 

আক্কাস আলীর ছেলে শামীম হোসেন (৩০) ও সবুজ হোসেন (৩৫), রফিকুল ইসলাম খন্দকারের ছেলে মো. নয়ন হোসেন (২৫),  

রহিদুল ইসলামের ছেলে আ. রউফ (৩০), বিপ্লবের ছেলে দিপন (৩২), অফিজ উদ্দিনের ছেলে মো. শুভ (২৪), মো. আমানত হোসেমের ছেলে মো. সাইদুল ইসলাম (৩০), আ. জলিলের ছেলে মো. মুনসুর (৪৫), মো. সাগের উদ্দিনের ছেলে মো. বাবু (৪৫), বাপ্পি তালুকদারের স্ত্রী শিরিনা বেগম (৩৫), মো. সোহাগের পত্নী লাকি বেগম (৩০), মেছের আলী তালুকদারের ছেলে মোজাম্মেল হক (৫০) এবং অপর পক্ষের মো. জয়নাল (৫০), সেন্টু মোল্লা (২৮), শুভ মোল্লা (২৭) এবং হেলাল (২৮)।  

সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার (ওসি) মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, দখল প্রসার এবং ২০১৬ সালের ১টি হত্যাকাণ্ড নিয়ে বেড়াবাড়ি গ্রামের রেজা-সাইফুল-মানিক মেম্বার এবং আনোয়ার হোসেন-দিপক-বাবু গ্রুপের ভিতরে পূর্ববিরোধ চলে আসছিল। আজ সকালে পূর্ব বিরোধসহ ওই গ্রামের একটি দিঘির ডহর ব্যবহারকে ভিত্তি করে দুই পক্ষের ভিতরে কথা কাটাকাটি চালু হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতি এবং উত্তেজনার প্রস্তুত  হয়। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চালু হয় এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একই সাথে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের সিংড়া উপজেলা শরীর কমপ্লেক্সে অ্যাডমিট করা হয়েছে। কিন্তু সাংঘাতিক অবস্থায় ১৫ জনকে বগুড়া ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।  

ওসি বলেন, লোকমুখে গোলাগুলির খবর শুনেছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলির আলামতও পাওয়া গেছে। কিন্তু সেটি ছিল লাইসেন্সধারী বন্দুকের। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এই ব্যাপারে এখনো কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  এছাড়া এই ঘটনায় ৯জনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, মামলার প্রস্তুতি চলছে।  

সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার মইনুল হক রিকো বাংলানিউজকে জানান, হাসপাতালে অ্যাডমিট হওয়া আহতদের অনেকেই গুলিবিদ্ধ। এজন্য তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। অন্যদের সিংড়া হাসপাতালেই সেবা সেবা দেওয়া হচ্ছে।  

ডাহিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মামুন সিরাজুল মজিদ গোলাগুলির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান,  ২০১৬ সালে রেজাউল নামে এক ব্যক্তিকে  করা হয়। ওই খুন মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন রেজা-সাইফুল-মানিক মেম্বার সহ আরও অনেকে। আর প্রতিপক্ষরা হলেন ওই মামলার সাক্ষী। শিগগিরই ওই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে আদালতে। এই নিয়ে তাদের মধ্যে গায়ের ঝাল বাড়তে থাকে। আর ওই ঘটনাকে ভিত্তি করে আজ সকালে আনোয়ার পক্ষের লোকজন মাঠে কাজ করতে যাওয়ার সময় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এই নিয়ে দুই পক্ষের ভিতরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটলেও রেজা-সাইফুল-মানিক মেম্বার পক্ষের লোকজন আনোয়ার হোসেন-দিপক-বাবু পক্ষের লোকজনের উপর বন্দুক দিয়ে গুলি চালায়। এতে ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আঘাতগ্রস্থ হয়েছেন। তিনি এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও সঠিক বিচার দাবি করেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow