আজ বড় দিন : ২৫ ডিসেম্বরেই কেন বড়দিন পালন করেন ? জানুন
বাইবেলে যিশুর জন্মতারিখের কোনও উল্লেখ না থাকলেও, প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর দিনটি যিশুর জন্মদিন হিসেবেই পালন করা হয়।
বাইবেলে যিশুর জন্মতারিখের কোনও উল্লেখ না থাকলেও, প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর দিনটি যিশুর জন্মদিন হিসেবেই পালন করা হয়। ইতিহাস বলে ২৪ ডিসেম্বর রাতে বেথেলহেমের এক গোশালায় কুমারী মা মেরীর কোলে জন্ম হয় যিশুর। বলা হয় বিশ্ব হতে হিংসা ভেদাভেদ মুছে ফেলতেই উৎপত্তি হয় তাঁর। এমনকী অধিকাংশই যিশুকে সূর্যের সন্তানও মনে করেন। কিন্তু প্রথম কবে বড়দিন পালন করা হয়েছিল সেই নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। যিশুর জন্মধরেই খ্রিস্টাব্দের হিসেব করা হয়। তবুও অনেকেই মনে করেন, তার একবছর আগে জন্মেছিলেন যিশু। কিন্তু অনুমান, ৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বড়দিন পালন করা হয়, ক্যাথলিক রাজা কনস্ট্যানটাইনের আমলে। এর কতিপয় বছর পর পোপ জুলিয়াস ঘোশণা করেন ২৫ ডিসেম্বর উদযাপন হবে বড়দিন হিসেবে। বড়দিন ঘিরে দ্বিমত আছে জুলিয়ান ও গ্রেগরিয়ান দিনপঞ্জিতেও। অনেক অর্থোডক্স এবং কপ্টিক চার্চ এখনো গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের বদলে জুলিয়ান দিনপঞ্জি অনুযায়ী ৭ জানুয়ারি বড়দিন পালন করে।
আরও পড়ুনঃ ক্রিসমাসের অন্যতম আকর্ষণ
প্রাচীন রোমানরা ছিল প্রকৃতির পূজারি। এইজন্য অনেকেই ভাবেন এ রোমান প্যাগনরাও যাতে উৎসবে মেতে উঠতে পারেন সেই কথা ভেবেই ২৫ ডিসেম্বর পালন করা হয় বড়দিন। তা সত্ত্বেও এই তথ্যের স্বীকৃতি দেয় না ইতিহাস। ইতিহাস বলে, খ্রিস্টানরা প্যাগন ধর্মকে বিশেষ দিতে চায়নি। বরং সবসময়ই একটু দূরত্বে থাকার চেষ্টা করেছে।
আবার রোমান পঞ্জিকা অনুসারে, ২৫ মার্চ মেরী জানতে পারেন উনি সন্তানসম্ভবা। সেইদিনই আবার ক্রুশবিদ্ধ করে যিশুকে করা হয়। এর হতে ৯ মাস পরই আসে ২৫ ডিসেম্বর। হিসেব মনেলানো প্রচুর একটা কঠিন নয়।
খ্রিসমাস শব্দের উৎপত্তি
মূলত গ্রীক আর লাতিন শব্দের সমন্বয়ে তৈরি এ খ্রিসমাস শব্দটি। Cristes শব্দটি গ্রীক Christos এবং লাতিন missa থেকে এসেছে। আবার প্রাচীন গ্রীসের Christos বানানের প্রথমঅক্ষকটি লাতিন অক্ষর X এর সমরূপ। আর একারণে ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগ হতে এক্স অক্ষরটি খ্রিস্টের নামের শব্দ সংক্ষেপ হিসেবে ইউজ করা শুরু হয়।
কেন খ্রিসমাস পালন করা হয়
ভারতবর্ষে ১ম ক্রিসমাস পালন করা হয় ১৬৬৮ সালে। জব চার্ণক প্রথম বড়দিন পালন আরম্ভ করেছিলেন বলা হয়ে থাকে শোনা যায়। সূর্যের উত্তরায়ণ সম্পন্ন হয়ে চালু হয় দক্ষিণায়ন। এদিন হতে বেলা একটু একটু করে বড় হয়। সেই সাথে শীতের প্রকোপও কমতে শুরু করে। এছাড়াও বিশ্বাস এই দিনেই যাবতীয় যন্ত্রণা হতে পেয়েছিল বিশ্ব। যে কারণে সবাই অপরকে উপহার দিয়ে আনন্দের সঙ্গে দিনটি পালন করেন। পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি দেশে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন পালন করা হলেও ব্যতিক্রম রাশিয়া, জর্জিয়া, মিশর, আর্মেনিয়া। জুলিয়ান পঞ্জিকা অনুসারে ৭ জানুয়ারি এইখানে বড়দিন পালন করা হয়। প্রায় ২০০০ বছর আগে বিশ্বের মানুষকে খালাস এবং কল্যাণের রাস্তা দেখিয়েছিলেন যিশু। বড়দিনে তাই খ্রিসমাস ক্যারল, মোমবাতি, উপহারে তাঁকেই চিন্তা করে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা।
What's Your Reaction?